সরকারি দলের সন্ত্রাসীদেরকে নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১৩:৪০

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসূচির ওপর সরকারী দলের সন্ত্রাসীদেরকে ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। দেশের জেলা সদর ও মহানগরসহ হাটবাজার—গঞ্জে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর হামলার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আর এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সম্প্রতি কয়েক দিনে দেশের অধিকাংশ স্থানে পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর যৌথ প্রযোজনায় হামলা চালিয়েছে। আর এই হামলায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ নিহত হয়েছেন, কেউ চোখ হারিয়ে অন্ধ হয়েছেন, কেউ হাত পা হারিয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের ‘সম্পূরক শক্তি’ হিসেবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, জনগণের আস্থাহীন এই অবৈধ সরকার সন্ত্রাস, হামলা এবং মামলার এক শৃঙ্খল তৈরী করে দেশের জনগণকে বন্দি করে রেখেছে এবং গণতন্ত্রকে অন্ধকার কূপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আসলে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বহুমত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা শুনলেই আওয়ামী লীগ মূর্ছা যায়। আওয়ামী নীতি নির্ধারকরা দেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নির্মূল করে নব্য বাকশালী ক্ষমতা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার মতলব আঁটছে। সেই কারণে বিএনপির গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলা চালিয়ে তারা একটি সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।

রিজভী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হচ্ছে না, তবে কর্মসূচির নামে রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য উস্কানিমূলক এবং নিজের দলের সন্ত্রাসীদেরকে আশকারা দেয়ার সামিল। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চাই—বিএনপি’র কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত, অথচ একই দিন আওয়ামী লীগ শান্তিসভা কিংবা শান্তিমিছিল করলে তখন কি জনদুর্ভোগ হয় না? বিএনপির কর্মসূচির দিন কেন আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করে? কেন আওয়ামী লীগ ‘৭১ এর শান্তিকমিটির মতো শান্তি সমাবেশ বা শান্তিমিছিল করে? এটি করার উদ্দেশ্য—বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসা নেতাকর্মীদের বাধা প্রদান করা, হামলা করা এবং তাদেরকে হত্যা ও জখম করা।

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হওয়া, রক্তাক্ত হামলা চালানো প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশ সরকারি সন্ত্রাসীদের পক্ষে পক্ষপাত দেখায় অথবা তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। আর এই ভয়ঙ্কর সর্বনাশা সহিংস সন্ত্রাসের জন্য দায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার নিয়ন্ত্রিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রটেকশনেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রক্তাক্ত হামলায় মেতে উঠে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আরও বলতে চাই—২২ জুলাই তারুণ্যের সমাবেশ থেকে বিএনপির ২৭ জুলাই মহাসমাবেশের কর্মসূচির ঘোষণা দেয়ার পরপরই যুবলীগের ২৪ জুলাইয়ের সমাবেশ পরিবর্তন করে ২৭ জুলাই করা হলো কেন? এর কি জবাব আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে? কোন অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই যুবলীগের সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, ১৮ ও ১৯ জুলাই পদযাত্রা এবং ২২ জুলাই ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন ৪ হাজার একশোর বেশি মানুষ। নিহত হয়েছেন ২ জন। গত ১৯ মে হতে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশে

মোট মামলা ৩১৫টি, গ্রেপ্তার ১৩৫০ জন এবং আসামি করা হয়েছে ১২ শতাধিক নেতাকর্মীকে।

ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/জেবি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :