বগুড়ায় আলুর ক্ষে‌তে ছড়িয়ে পড়ছে লেটব্লাইট রোগ

বগুড়া প্রতি‌নি‌ধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫৩| আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৪
অ- অ+

বগুড়ায় আলুর ক্ষে‌তে ছড়িয়ে পড়ছে লেটব্লাইট রোগ। ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে ওষুধের আশ্রয় নিতে হচ্ছে জেলার কৃষকদের। ফলে আলু চাষে খরচ বাড়ছে তেমনি উৎপাদন ঘাটতি নিয়ে শঙ্কাও দেখা দিচ্ছে।

ত‌বে কৃ‌ষি বিভাগ বল‌ছে, জমিতে বিক্ষিপ্ত আকারে আলুর গাছ আক্রান্ত হয়েছে। এটি আমাদের জেলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোনো ঘাটতি ফেলবে না।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গে‌ছে, বগুড়ায় এবার ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। যেখান থেকে ১৩ লাখ ২০ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ দিকে গত মৌসুমে জেলায় আলুর আবাদ হয়েছিল ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর। আর উৎপাদন হয়েছিল ১২ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত জেলা ধরা হয় বগুড়াকে। আলুর জন্য শীত উত্তম আবহাওয়া। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও তাপমাত্রা কমবেশি হলে ছত্রাকজাতীয় রোগ লেটব্লাইটের আক্রমণ ঘটে। মূলত এটা ছাড়া আলুর আর তেমন কোনো রোগ দেখা যায় না। সাধারণত, কুয়াশার সময় আলু চাষে সপ্তাহে একবার ছত্রাকনাশক ছিটাতে হয়।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর নয়াপাড়া গ্রা‌মের আজমল হোসেন ব‌লেন, এখন এই রোগ দেখা দেওয়ায় বাড়তি খরচের ঝামেলায় পড়েছেন তিনি। গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহে আলুর গাছে লেট ব্লাইট রোগ দেখে দিয়েছে। এর মধ্যে আলু গাছে পচন ধরেছে। গাছের বয়স ৪০ থেকে ৪৫ দিন, তবুও ঔষুধ স্প্রে করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। গাছ মরে গেলে আমাদেরকে বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে।

জাহিদুল ইসলাম না‌মের আরেক কৃষক ব‌লেন, আলুর ক্ষে‌তে ছত্রাকনাশক ওষুধের পিছনে বেশি খরচ করতে হয়। জমি ভেদে তিন থেকে পাঁচ বার এই ওষুধ দিয়ে থাকে কৃষকেরা। আমার জমিতে আলু তোলার আগ পর্যন্ত তিন হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এবার এটি ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা হতে পারে।

শিবগঞ্জ উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, আলুর লেটব্লাইট রোগ ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণ। এ রোগের জন্য আমরা প্রধানত ছত্রাকনাশক ম্যানকোজেন গ্রুপের ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিই। সঠিক সময়ে সঠিক ওষুধ প্রয়োগ করলে ভয়ের কোনো কারন নেই। তবে আলুর গাছ ৩০ দিন বয়সী হলে এসব ওষুধ বেশি কার্যকর হয়।

তিনি আরও বলেন, এবার ঠাণ্ডা বেশি। মাঠ পর্যায়ে দেখা গেছে যে সব জমিতে ৫ থেকে ৬ বার ছত্রাকনাশক দিতে হতো। এবার সেখানে ১০ বার করেও দেয়া লাগতে পারে। এতে কৃষকের খরচ একটু বেশি হবে বলে ধারণা করা যায়।

জেলার সবগুলো উপজেলায় কমবেশি আলুর আবাদ হয়। তবে শিবগঞ্জ, কাহালু, শাজাহানপুর উপজেলায় এই আবাদের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। ঘন কুয়াশায় দেখা দেয়া লেটব্লাইট রোগ বড় আকারে দেখা দেয়নি। বরং এসব উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জমিতে বিক্ষিপ্ত আকারে আলুর গাছ আক্রান্ত হয়েছে। এটি আমাদের জেলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোনো ঘাটতি ফেলবে না।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) নাজমুল হক মণ্ডল। তিনি বলেন, তীব্র শীতের জন্য এই রোগের প্রাদুর্ভাব। শীত কমে গেলেই রোগের প্রকোপ কমে আসবে। সব মিলিয়ে জেলায় সর্বোচ্চ ৫০০ হেক্টর জমির আলুর গাছ আক্রান্ত হয়েছে। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ইবিতে গুচ্ছভুক্ত ‘বি ইউনিটের’ উপস্থিতি ৯৬ শতাংশ
ফেনীতে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ব‍্যাংকার হয়ে আমি কীভাবে লেখালেখির সময় পাই?
বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনের দাবি জানানোও যেন অপরাধ: তারেক রহমান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা