কালকিনির বেদে পল্লিতে হামলা, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ায় কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খানের নেতৃত্বে বেদে পল্লিতে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেদ পল্লির বেশ কয়েকটি ঘর তছনছ করা হয়েছে। এসময় বেদে পল্লির মানুষের মাঝে অজানা এক আতঙ্ক বিরাজ করতেও দেখা গেছে।

হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম। পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত ১৭টি পরিবারকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেছেন তিনি।

এদিকে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচার দাবিতে শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে বেদে পল্লির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, মাদারীপুর-৩ আসনের বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কর্মী-সমর্থকরা নৌকায় ভোট দেওয়ায় টানা দুই দিনে বেদে পল্লির ১৭টি বাড়ি ঘরে তাণ্ডব চালিয়েছে। হামলার সময় লুটপাট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্জনা বেগম বাদী হয়ে গত ১০ জানুয়ারি ৪২ জনের বিরুদ্ধে কালকিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কালকিনির চর ঠেঙ্গামারা গ্রামে নতুন এমপি কয়েকশ অস্ত্রধারী কর্মী সমর্থক বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা চালায়। দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ১৭টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

বেদে পল্লির সর্দার মনির হোসেন জানান, একসঙ্গে কয়েকশ মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। ঘর থেকে সবকিছু নিয়ে গেছে। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, দামি আসবাবপত্র, খাবারের চাল-ডালও বাদ পড়েনি। পা ধরে তাদের নিষেধ করলেও কেউ শোনেনি। হামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খান ও তার ভাই রাশেদ খান নেতৃত্ব দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খান। তিনি বলেন, আমি আসার আগেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। আমি থামানোর চেষ্টা করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়।

হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, মাদারীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে তাহমিনা বেগম জয়লাভ করেন এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সোবহান গোলাপ বিপুল ভোটে পরাজিত হন।

(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/পিএস)