লালকুঠির সামনে থেকে পন্টুন-লঞ্চঘাট সরাতে মেয়র তাপসের নির্দেশ
ঐতিহাসিক লালকুঠির (নর্থব্রুক হল) সামনে দীর্ঘদিন ধরে দখলকৃত অবস্থায় থাকা নদীর অববাহিকা দখলমুক্ত করতে বিআইডব্লিউটিএ-কে নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
লালকুঠির সামনে থাকা পন্টুন-লঞ্চঘাটসহ সমস্ত স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি জানান, লালকুঠির সৌন্দর্য তথা ঢাকাকে উপভোগ করবে মানুষ।
বুধবার দুপুরে লালকুঠিতে চলমান সংস্কার কার্যক্রম পরিদর্শনকালে উপস্থিত বিআইডব্লিউটিএ- এর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফাকে এই নির্দেশনা দেন তিনি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে মেয়র তাপস বলেন, ‘এখানে বিআইডব্লিউটিএ-এর চেয়ারম্যান সাহেব আছেন। আমি ওনাকে লালকুঠির সামনের অববাহিকা থেকে এসব স্থাপনা সরাতে বলেছি। এ বিষয়ে আমি নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সাথেও কথা বলেছি। ওনাদের কিছু খরচ আছে। কিন্তু আমরা বলেছি, ওনাদের খরচটা আমরা বহন করব। আসলে উদ্যোগের বিষয়ে ওনারা যদি উদ্যমী হন, তাহলে আমরা কাল থেকেই কাজ শুরু করতে পারব।’
লালকুঠির সামনের রাস্তায় পার্কিং দিয়েও দখল করে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, নদীর অববাহিকা দখল অবস্থায় আছে। আমরা আগে থেকেই বলেছি, তাদের এখানে যে সকল অবকাঠামো, পন্টুন ও লঞ্চঘাট আছে সেগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য। এছাড়াও আমাদের সামনের এই রাস্তাটা দখল করে সেখানে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই আপনাদের মাধ্যমে আমি আবারও বলব, অবিলম্বে এই জায়গাটা খালি করে দিতে। এ স্থাপনার দুই সীমানার কোণা থেকে ৪৫ ডিগ্রিতে নদীর সীমানা আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। সেটা হলে নদী থেকে সুন্দরভাবে স্থাপনাটা দেখা যাবে। রাতে প্রজ্জ্বলিত থাকবে। সবাই ঢাকাকে উপভোগ করবে।’
বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পুরোনো আদলেই এটি সংস্কার করা হচ্ছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘লালকুঠি আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। যেটা লর্ড ব্রুকের সময় ১৮৭৭ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি মূলত টাউন হল ছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তখন ওনাকে বাংলাদেশে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেটা এই ভাবনেই দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং আমরা সেভাবেই গুরুত্ব দিয়ে লালকুঠিকে পূর্ণভাবেই সংস্কার করছি। এটি অত্যন্ত দুরুহ। আমরা এই স্থাপনার পুরনো ছবি দেখে সেই নকশা অনুযায়ী এটাকে সংস্কার করছি।’
এ সময় উপস্থিত বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান গণমাধ্যমেকে বলেন, ‘এখানে যেহেতু একটি ঐতিহাসিক স্থাপনার সংস্কার কাজ হচ্ছে, সেহেতু সিটি করপোরেশন, বিআইডব্লিউটিএ এবং আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় মিলে সামনের স্থাপনা সরাতে যৌথভাবে কাজ করব। আশা করি, পরিকল্পনা করেই আমরা এর একটি সুন্দর সমাধান করতে পারব।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কাউন্সিলরদের মধ্যে করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আনিসুর রহমান, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আরিফ হোসেন ছোটন, সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসন ১ এর ফারজানা ইয়াসমিন বিপ্লবী ও সংরক্ষিত আসন ১৬ এর নাসিমা আহমেদ প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/৩১জানুয়ারি/এইএফ/এসআইএস)