নিয়ামতপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ

ইতিহাসের পাতায় রাজা-বাদশা-জমিদারদের সঙ্গী হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করতো ঘোড়া। তবে সময়ের ব্যবধানে নেই রাজকীয় আমল, নেই জমিদারি প্রথাও। ফলে রাজা-জমিদারদের আস্তাবল থেকে ঘোড়া চলে এসেছে কৃষিজমিতে। কৃষিকাজে বাড়ছে তাদের কদর।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা মিলছে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ। কৃষকদের মতে, গরুর চাইতে ঘোড়ার দাম কম। কিন্তু গরুর মতোই ঘোড়া দিয়ে চাষ করা যায়।

গত কয়েকদিন আগে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করার দৃশ্য দেখা গেছে।

উপজেলার বরেন্দ্র বাজার মাঠে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করছিলেন ভারদণ্ড গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, ১৪ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়াটি কিনেছেন। একজোড়া ভালো গরুর দাম পড়বে প্রায় এক লাখ টাকার মতো। আমার মত গরিব মানুষের অত টাকা দিয়ে গরু কেনা সম্ভব নয়। তাই দুইটা ঘোড়া কিনেছি।

একই গ্রামের কৃষক মইনুর রহমান। তিনিও ঘোড়া দিয়ে চাষ করেন। জামালপুর থেকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দুইটি ঘোড়া কিনেছেন তিনি। গরুর মতই ঘোড়া দিয়ে চাষ করানো যায়। কোনো অসুবিধা হয় না। আবার ঘোড়ার পিঠে চেপে চলাচল করা যায়। তিনি জানালেন, এক বিঘা জমিতে মই দিতে ২০০-২৫০ টাকা নেন।

উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক মামুন হোসেন বলেন, আমি ৫ বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ করছি। আমি আমার এলাকা ছাড়াও সাবাইহাট, দেলুয়াবাড়ী, কেশরহাট, মোহনপুর, ছাতড়া মাঠে চাষাবাদ করতে যাই।

শ্রীমন্তপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, অন্যদের দেখাদেখি আমিও একটা ঘোড়া কিনেছি। ভালোই চাষাবাদ করতে পারছে।

চাচড়াপাড়া গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে এই ঘোড়া দিয়ে মই দিয়ে নিচ্ছি। গরুর হালের মতই জমি সমান

হয়। তিনি আরও জানালেন, এবার আমার ৮ বিঘা জমিতে ঘোড়া দিয়ে চাষ করিয়ে নিব।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে কৃষিকাজ যান্ত্রিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা এখন আধুনিক কৃষিযন্ত্র ব্যবহার করে অল্প সময়ে বেশি জমি চাষ করেন। বর্তমানে সনাতন পদ্ধতির কৃষিকাজ নেই বললেই চলে। তবে কেউ ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ করলে তার নিজস্ব কারণে করতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের সবসময় কৃষিতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি।

(ঢাকা টাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)