১৯ বছর পর মানিকগঞ্জে স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর লুকিয়ে থেকে অবশেষে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়লেন মানিকগঞ্জে স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লাল চাঁন ওরফে রবিন (৪২)।

লাল চাঁন সিঙ্গাইর উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের করিম গাজীর ছেলে। পালক পিতা মুন্নাফ পাল তাকে লালনপালন করেন। তিনি ২০০৫ সালে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সালমা আক্তারকে হত্যা করেছিলেন।

রবিবার (১৭ মার্চ) রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকা থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪। পরে রাত বারোটার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর লেফটন্যান্ট কমান্ডার মো. আরিফ হোসেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালের জুনে লাল চাঁনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের দক্ষিণ শাহরাইলের সালমা আক্তারের। বিয়ের পরই লাল চাঁন নেশা ও জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েন। এরপর থেকেই সালমা আক্তার ও তার পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করতে থাকেন লাল চানঁ। সালমার পরিবার লাল চাঁনের দাবীকৃত যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর করতেন স্ত্রীকে। এ বিষয় নিয়ে এলাকায় একাধিক গ্রাম্য শালিশী বৈঠকও হয়েছে। সবশেষ ২০০৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রবিনের মারপিটে সালমা আক্তার মারা যান। পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি নিহতের মা বাদী হয়ে সিঙ্গাইর থানায় মামলা দায়ের করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত শেষে সত্যতা ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে লাল চাঁনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমান ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ আসামি লাল চাঁনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে আসামি পলাতক থাকায় বিজ্ঞ আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলা রুজুর পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে আসামি লাল চাঁন ছদ্মনাম রবিন ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় একেক সময় একেক পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। কখনো কাঠ মিস্ত্রি আবার কখনো দিনমজুরি করেন। প্রথম স্ত্রী হত্যার পর লাল চাঁন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বর্তমানে তার পরিবারে রানী নামে ১টি মেয়ে আছে।

র‌্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর লেফটন্যান্ট কমান্ডার মো. আরিফ হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/প্রতিনিধি/এসআইএস)