সিলেট টেস্ট জিততে বাংলাদেশের দরকার ৫১১
প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। আর এই সেঞ্চুরি করে বিরল এক রেকর্ড গড়েছেন তারা। কোনো দলের নির্দিষ্ট দুজন ব্যাটার এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন এমন ঘটনা লাল বলের ইতিহাসে বিরল। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন বিরল কীর্তি গড়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। তাদের এমন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে সিলেট টেস্টে বাংলাদেশকে ৫১১ রানের লক্ষ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ১৮৮ রানে অলআউট করে ৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তাদের শুরুটা হয়নি। বাংলাদেশি পেসারদের বোলিং তোপে ১১৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছ তারা। যার ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার লিড দাঁড়ায় ২১১ রান। এরপর তৃতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারালেও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া অর্ধশতকে বড় লিডের পথে এগোতে থাকে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান করে ৩২৫ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় লঙ্কানরা। বিরতি থেকে ফিরে জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। তাদের রেকর্ড করা সেঞ্চুরিতে ভর করে সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে ৪৩০ রানের লিড নিয়ে চা পানের বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা।
চা পানের বিরতি থেকে ফিরে দ্রুত তিন উইকেট শ্রীলঙ্কা। তবে দশম উইকেটে কাসুন রাজিতাকে নিয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান কামিন্দু মেন্ডিস। তাণ্ডব চালিয়ে দশম উইকেটে যোগ করেন ৫২ রান। শেষ পর্যন্ত ২৩৭ বলে ১৬৪ রান করে তাইজুল ইসলামের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। যার ফলে ৪১৮ রানে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। আর লিড গিয়ে দাঁড়ায় ৫১০ এ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ৫১১ রান।
তৃতীয় দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামেন আগের দিনে ২৩ রানে অপরজিত থাকা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও ২ রান করা বিশ্ব ফার্নান্ডো। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি খালেদ আহমেদ। খালেদ আহমেদের বলে মেহেদী হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ২৪ বলে ২ রান করা বিশ্ব ফার্নান্ডো।
বিশ্ব ফার্নান্ডোর বিদায়ের পর জুটি গড়েন প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। এই জুটিতে ভর করে লিড ৩০০ ছাড়ায়। ইতোমধ্যেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ তিনি ৮২ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। এই জুটিকে থামাতে ঘাম ঝড়াচ্ছেন বাংলাদেশের বোলাররা।
তবে সবাই ব্যর্থ হন। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার পর আজ অর্ধশতক তুলে নেন কামিন্দু মেন্ডিসও। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬৯ বলে আজ তিনি তুলে নেন অর্ধশতক। এই জুটিতে ভর করে তীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান করে ৩২৫ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা।
বিরতি থেকে ফিরে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি তুলে নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৮২ বলে অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর তিনি ১৬৪ বল তুলে নেন সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর নিজের ইনিংসকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি।
১৭৯ বলে ১০৮ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে ১৭৩ রানের জুটি।
ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার পর সেঞ্চুরি তুলে নেন প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া কামিন্দু মেন্ডিস। ৬৯ বলে অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর ১৭১ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। আর এই সেঞ্চুরি করে বিরল এক রেকর্ড গড়েছেন তারা। কোনো দলের নির্দিষ্ট দুজন ব্যাটার এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন এমন ঘটনা লাল বলের ইতিহাসে বিরল। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন বিরল কীর্তি গড়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। এরপর ৯৪ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে ৪৩০ রানের লিড নিয়ে চা পানের বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা।
বিরতি থেকে ফিরে কামিন্দু মেন্ডিস ও প্রভাত জয়সুরিয়া দেখেশুনে খেলতে থাকেন। ক্রমেই এই জুটিও ভয়ঙ্ক হয়ে ওঠছিল। অবশেষে এই জুটিকে থামান মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৪৭ বলে ২৫ রান করা প্রভাত জয়সুরিয়া। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৭ রানের জুটি।
প্রভাত জয়সুরিয়ার বিদায়ের পরের বলেই এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান লাহিরু কুমারু। তার বিদায়ে ৩৬৬ রানে ৯ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
৯ উইকেট হারানোর পরও দশম উইকেটে কাসুন রাজিতাকে নিয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান কামিন্দু মেন্ডিস। তাণ্ডব চালিয়ে দশম উইকেটে যোগ করেন ৫২ রান। শেষ পর্যন্ত ২৩৭ বলে ১৬৪ রান করে তাইজুল ইসলামের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। যার ফলে ৪১৮ রানে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। আর লিড গিয়ে দাঁড়ায় ৫১০ এ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ৫১১ রান।
এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে খালেদ আহমেদের ঝোড়ো বোলিংয়ে ৫৭ রানেই ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ৫৭ রানেই ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এই জুটিতে ভর করে ২২ ওভারে ৯২ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা। লাঞ্চ থেকে ফিরে জোড়া অর্ধশতক তুলে নেন এই দুই ব্যাটার। তাদের জুটিতে ভর করে দ্বিতীয় সেশনটা নিজেদের করে নে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় সেশনে লঙ্কানদের কোনো উইকেটই ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বিনা উইকেটে ১২৫ রান তুলে নেয় এই সেশনে তারা। যার ফলে দ্বিতীয় সেশন শেষে ৪৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চা পানের বিরতি থেকে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে এই জুটি। এই দুই ব্যাটারই তুলে নেন সেঞ্চুরি। তারপর লঙ্কান শিবিরে আঘাত হেনে এই দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ফেরান অভিষিক্ত নাহিদ রানা। যার ফলে আবারও খেলায় ফেরে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৬৮ ওভার খেলে সব উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান তুলতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কা।
এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে তারাও দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে। ১০ ওভারে ৩২ রান তুলতেই টাইগাররা হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। লঙ্কানদের চেয়ে ২৪৮ রানে পিছিয়ে থেকে প্রথম দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বসে তারা। নবম উইকেটে খালেদ ও শরিফুলের ৪০ রানের জুটিতে ভর করে ৫১ ওভার ১ বলে সব উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। যার ফলে প্রথম ইনিংস শেষে লঙ্কানদের লিড দাঁড়ায় ৯২ রানের।
৯২ রানের লিড নিয়ে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। বাংলাদেশি পেসারদের বোলিং তোপে ১১৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছে তারা। যার ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার লিড দাঁড়ায় ২১১ রান।
(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/এনবিডব্লিউ)