ওয়ান-ইলেভেনের সময় কি চোর হয়ে জেলে গিয়েছিলেন, কাদেরকে মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৪ মে ২০২৪, ১৬:৫২ | প্রকাশিত : ০৪ মে ২০২৪, ১৬:২২

‘জেলে কোনো রাজবন্দি নেই’ সরকার পক্ষের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘‘ওয়ান-ইলেভেনের সময় আপনারা চোর হয়ে সেদিন জেলে গিয়েছিলেন? নাকি রাজবন্দি হয়ে জেলে গিয়েছিলেন, আমি জানতে চাই।’’

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিবের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেমের বক্তব্য তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কী বিচিত্র বাংলাদেশ। একশ টাকার জন্য চোরের হাত বেঁধে রাখেন, এক হাজার কোটি টাকা যারা চুরি করেন, তাদেরকে স্যালুট দেন। এই তো বাংলাদেশ।’

‘আজকে বাংলাদেশে কী করুণ অবস্থা। এইটা বিশ্বের সকলই জানে, বাংলাদেশ কী দুরবস্থার ভিতর আছে। তার চেয়ে বেশি করুণ অবস্থায় বিএনপি নেতাকর্মীরা, তারা কী অবস্থায় আছে। প্রতিদিন আমার বাসায় ৫০ থেকে ১০০ জন অভিভাবক, স্ত্রী- সন্তান আমার কাছে আসে। কেউ বলে আমার বাবা জেলে, কেউ বলে আমার স্বামী জেলে, কেউ বলে আমার ছেলে জেলে, কেউ বলে আমার ভাই জেলে। কত জনের জন্য কথা বলব, আর কত জনের জন্য সান্ত্বনা দেবো’ বলেন মির্জা আব্বাস।

এই দেশ স্বাধীন করেছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এমন মন্তব্য করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস। তার দল, বিএনপির যে নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছেন এখন। আল্লাহই জানেন, কয়দিন পরে তার কী হয়। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা কতবার বলেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে অথবা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠান। ওনার অবস্থা বেশি ভালো না। সরকার বলছে আইন নাই।’

‘আইন থাকবে না কেন, আইন কি মানুষের জন্য, না আইনের জন্য মানুষ’ এমন প্রশ্ন তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, রাশেদ খান মেনন ও আ স ম আব্দুর রব বন্দি অবস্থায় চিকিৎসার জন্য বিদেশ গিয়েছিলেন । তিনি বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাদেরকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। আ স ম আব্দুর রবকে বন্দি অবস্থায় জিয়াউর রহমান এবং রাশেদ খান মেননকে পাঠিয়েছিলেন আজকের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। অথচ তারা (সরকার) বলছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। অর্থাৎ তাকে হত্যা করতে হবে। এমনভাবেই করতে হবে, যাতে কেউ কিছু বলতে না পারে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, কাদের সাহেব বললেন, ‘‘জেলে কনো রাজবন্দি নেই।’’

‘কী সুন্দর কথা বললেন কাদের সাহেব, আমার খুব হাসি পায়। কাদের সাহেব আপনি যখন ওয়ান-ইলেভেনে জেলে ছিলেন। আপনি কি চোর হয়ে সেদিন জেলে গিয়েছিলেন? নাকি রাজবন্দি হয়ে জেলে গিয়েছিলেন, আমি জানতে চাই। এক-এগারোর সময় আজকের যিনি প্রধানমন্ত্রী উনিও জেলে গিয়েছিলেন। উনি কী হয়ে জেলে গিয়েছিলেন? আমি জানতে চাই।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনাদের মনে থাকে না, একটা মামলা দেবেন, জেলে পাঠাবেন। আর বলবেন, কোনো রাজবন্দি জেলে নাই। এরা হলো মামলার আসামি। আরে কোন মালমার আসামি? রাজনৈতিক মামলার আসামি। যারা আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলে।’

গ্রেপ্তার করে পৃথিবীর কোনো আন্দোলন, কোনো স্বৈরশাসক থামাতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না এমন মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার জানা নেই। একদিন না একদিন এই স্বৈরশাসকের পতন ঘটবেই জনরোষের মুখে। এটাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

‘যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতেও পারবে না সে নির্বাচন বাংলাদেশের প্রয়োজন নেই। এখন একমাত্র একটি কাজ করতে পারেন রাজতন্ত্র কায়েম করতে পারেন। কিন্তু নির্বাচনের কথা আপনাদের (সরকার) মুখ দিয়ে মানায় না’ যোগ করেন মির্জা আব্বাস।

সরকারকে উৎখাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা তো সরকারই দেখি না। এটা তো নির্বাচন করে সরকার হয়নি। সুতরাং এ সরকারকে উৎখাত করার বা রাখার দায়-দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। জনগণ যখন মনে করবে, তখন এই সরকারকে লাথি দিয়ে ফেলে দিবে। তারা ক্ষমতা থাকতে পারবে না।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি শহীদ তালুকদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম সান্ত প্রমুখ।

এছাড়াও ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, তারেক উজ জামান তারেক, জয়দেব জয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ বকুল, জাকির হোসেন, মো. ইব্রাহীম, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ঢাকা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব সজীব রায়হান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ পরান, ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম মিশু, আতিকসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/০৪মে/জেবি/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :