ডিবি অফিস থেকে সমন্বয়কদের বিবৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে যা বললেন হারুন

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের দিয়ে জোর করে বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। বিষয়টিকে ‘গুজব’ উল্লেখ করে এ ধরনের তথ্য না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিবি একটি আস্থার জায়গা। সেখানে কাউকে আটকে রাখা হয় না। জোর করে বিবৃতি নেওয়া হয় না।’
সোমবার বিকাল পৌনে ৩টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের প্রধান ফটকে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন হারুন।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা অনুভব করেছেন সরকার তো সব দাবি মেনেই নিয়েছে, যে কারণে তারা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’
গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরাও তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, ছাত্র ছিলাম। এই ছয় সমন্বয়ক যাদেরকে নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এখানে এনেছি, তারা আমাদের সঙ্গে আছে। এই সমন্বয়কদের ঘিরে অনেক গুজব চলছে। আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাদের পরিবার ও সমন্বয়কদের নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা নিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে আজকে ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের পরিবার কিন্তু বলেছে ওরা ভালো আছে। ওদের পরিবার কিন্তু কাল রাতে এসেছিল। আজকেও ডিবিতে এসেছেন। তারা নিজেরাও দেখেছেন ওরা কেমন আছে। তাদের পরিবারের লোকজন গণমাধ্যমে কথাও বলেছেন।’
হারুন বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমরা মনে করি যদি কোনো ব্যক্তি নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন, আমাদের কাছে আসেন তাহলে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তাদের দেখভাল করা। সেটাই আমরা করছি।
হারুন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে তারা আর নাই জানিয়ে ইতোমধ্যে এই ছয় সমন্বয়ক একটা বিবৃতিও দিয়েছেন। ছয় সমন্বয়ক স্বেচ্ছায় বিবৃতি দেয়নি বলে রবিবার রাত থেকে গুজব ছড়াতে দেখছি। আমরা মনে করি, ডিবি কার্যালয় হচ্ছে মানুষের আস্থার জায়গা। এখানে মানুষকে হেনস্থা করা বা কারো প্রতি অন্যায় আচরণ করা, সেটা কখনোই ডিবি করে না, ভবিষ্যতেও করবে না। মানুষ যখন বিপদে পড়ে বা নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে তখন এখানে আসে বা আমরা নিয়ে আসি, আমরা তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি।
রবিবারও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে সমন্বয়কদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি তাদের পরিবারের সদস্যদের। পরিবার তো ডিবি অফিসের ভেতরে আছে, ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হবে কি না— জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘এটা ঠিক নয়, ‘গতকাল রাতেও তাদের পরিবারের লোকজন ডিবিতে এসেছে, দেখা করেছে। আজও দেখা করেছে, কথা বলেছে, সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ওরা যে ভালো আছে সেজন্য ধন্যবাদ দিয়েছে।’
হারুন বলেন, এই কোটাবিরোধী আন্দোলনটা করেছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তাদের ভেতরে ঢুকে একটি গোষ্ঠী জামায়াত-বিএনপি চক্র ধ্বংসাত্মকমূলক কাজ করেছে। পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে হত্যা, মানুষ হত্যা করেছে। রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোতে আগুন লাগিয়েছে। আমরা মনে করি, যদি আবার চক্রান্তকারীরা ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করে তাহলে, এই সমন্বয়কদের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হতে পারে। সেজন্য তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের দেখা দরকার।
আর কতদিন সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে রাখা হবে— জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘আমরা তাদের ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। খুব শিগগির তারা পরিবারের কাছে চলে যাবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/এলএম/কেএম)

মন্তব্য করুন