বিসিএসের প্রশ্ন ক্রয়-বিক্রয়কারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি সারজিসের

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র যারা ফাঁস করেছেন এবং যারা কিনেছেন, উভয়েরই সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। বুধবার রাতে নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি জানান তিনি।
সারজিস লিখেছেন, ‘একটি বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পাস করা যে কতটা অক্লান্ত পরিশ্রম ও সৌভাগ্যের বিষয় তা শুধু তারাই জানে যারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় যারা প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং যারা সেই প্রশ্নগুলো কিনেছে, তথ্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া ও শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
আরও লিখেছেন, ‘বাকি ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী; যারা মেধা, পরিশ্রম এবং যোগ্যতা দ্বারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে; ওই কালপ্রিটদের জন্য তাদের সঙ্গে এত বড় অন্যায় করা কখনও যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না। এ দুর্নীতির দায় আপনাদেরই নিতে হবে। তাই পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা এই প্রশ্নফাঁস ও প্রশ্ন ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনুন। কিন্তু অন্য ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে এক বছর নষ্ট করার কোনো অধিকার আপনাদের নেই।’
গত ২৬ এপ্রিল ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬১ চাকরিপ্রার্থী। পরে গত ৯ মে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে উত্তীর্ণ হন ১০ হাজার ৬৩৮ জন।
আগামী ২৮ আগস্ট থেকে এ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। তার আগেই এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে আওয়াজ তুললেন সারজিস। সঙ্গে তুললেন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি।
এর আগে মঙ্গলবার দেওয়া এক পোস্টে সারজিস জানান, শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনো রাজপথ ছেড়ে যাওয়ার সময় হয়নি। তাদের এখন চারটি দাবি আছে, সেগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন এই সমন্বয়ক।
চার দাবি কী কী?
১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে ‘হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে’, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
২. সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারবার কায়েমের চেষ্টা করছে; তাদের দ্রুত অপসারণ ও নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, শিগগির তাদের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এজে)

মন্তব্য করুন