ক্রিকেটকে আগাগোড়া ঢেলে সাজাবেন নতুন বিসিবি সভাপতি

বাংলাদেশ ক্রিকেটে শেষ হয়েছে নাজমুল হাসান পাপন অধ্যায়। আজ (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেছেন তিনি। এরপরই দেশের ১৫তম বোর্ড সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ফারুক আহমেদ। সাবেক এই অধিনায়ক দায়িত্ব গ্রহণের পরই সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মিরপুর শের-ই বাংলার প্রেস কনফারেন্স রুমে কথা বলেছেন অনেক বিষয়ে। ক্রিকেটকে আগাগোড়া ঢেলে সাজাবেন বলে জানান তিনি।
প্রেস কনফারেন্সের শুরুতে তিনি নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আগাগোড়া ঢেলে সাজাতে চান বলে জানান নতুন এই বিসিবি প্রধান। সেজন্য তিনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কিছু সেক্টর নিয়ে সবার আগে কাজ করতে চান। জাতীয় দলের পাশাপাশি গেম ডেভেলপমেন্ট, এইচপি, জিম, গ্রাউন্ডস, ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে শুরুতে কাজ করতে চান নতুন বিসিবি সভাপতি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম ও প্রধানতম দায়িত্ব আমার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এটা যদি আমরা মাথায় রাখি.. বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দল.. তাহলে কাজগুলো অনেক সহজ হবে। আমরা যেন অন্যদিকে ডাইভার্ট হয়ে না যাই। ক্রিকেট টিম, বাংলাদেশ ক্রিকেট সার্বিকভাবে এবং বাংলাদেশ.. আমরা এটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।'
দেশের অন্য সেক্টরের মতো বিসিবিতে দুর্নীতি আছে বলে জানান তিনি। বিসিবি থেকে দুর্নীতি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান নতুন এই সভাপতি। তিনি জানান নতুন এক সিস্টেম তৈরি করে বিসিবি থেকে দুর্নীতি দূর করা হবে।তিনি বলেন, প্রতিটা সেক্টরে এমন দুর্নীতি হয়েছে বাংলাদেশে। এটা আমরা সবাই জানি। আমরা তো সবাই বাংলাদেশেরই মানুষ। এক্ষেত্রেও কিন্তু, প্রতিটা সংগঠনে যেমন দুর্নীতির কথা শুনেছি; ক্রিকেট বোর্ড এটার বাইরে না। যদি এরকম কিছু থাকে, এটা আমরা লুক আফটার করবো। আমরা দেখবো জিনিসটা কী হয়েছে। আগামীতে দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। এটা কেউ যদি বলে, আমি তার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করবো না। কিন্তু একটা সিস্টেম চালু করতে হবে। যেখান থেকে আমরা এই জিনিসগুলো কমাতে পারবো। একসময় দুর্নীতমুক্ত একটা জায়গা পাবো।’
নবনির্বাচিত সভাপতি ফারুক আহমেদ খেলোয়াড় জীবন শেষে ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবালদের মতো কিছু তরুণের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা দেখে তাদের জায়গা করে দেন জাতীয় দলে। যখন তিনি দায়িত্ব ছাড়েন তখন তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ-সাকিবরা হয়ে উঠছেন দলের ভরসা।
এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৩ সালে তিনি প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পান। কিন্তু বিসিবির দ্বি-স্তরের নির্বাচক কমিটি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেন তিনি। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনের ইতিহাসও বটে।
তার অধীনে ২০১৫ বিশ্বকাপে সাফল্যের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্দান্ত সিরিজ জয় হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই বোর্ডে দেখা যায় বিশৃঙ্খলা, কাজের মধ্যে হস্তক্ষেপ শুরু হয়। সিস্টেমেও গলদ দেখা দেয়, শুরু হয় বোর্ড কর্তাদের হস্তক্ষেপ। ২০১৬ সালে দায়িত্ব ছাড়ার পর এসব অনিয়মের কথা বিভিন্ন সময় জানিয়েছিলেন স্পষ্টভাষী ফারুক আহমেদ।
একসময় জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়া এই অধিনায়ক এবার সামলাবেন পুরো ক্রিকেট। তার হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ক্রিকেট, সেই প্রত্যাশা সবার।
(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/ এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন