এবার গ্রেপ্তার আতঙ্কে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত ‘পুতুল দলের’ নেতারা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৩২| আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৪৯
অ- অ+

প্রয়াত রাজনীতিক নাজমুল হুদার দল তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের খবরে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ‘পুতুল দলগুলোর’ নেতাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কে কখন আটক-গ্রেপ্তার হচ্ছেন সেটিই তাদের আতঙ্কের কারণ।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত আড়াই মাসে দলটির বিভিন্ন স্তরের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাসহ বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীও গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে শমসের মবিনের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে কিংস পার্টি হিসেবে অভিহিত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার গ্রেপ্তারের খবর এই প্রথম।

একসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসা শমসের মবিন চৌধুরী ২০১৫ সালে দলটির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ২০১৮ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর দল বিকল্পধারায় যোগ দেন।

তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব নেন শমসের মবিন চৌধুরী। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আরেক নেতা তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব হন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বড় দল থেকে ছুটে আসা কোনো কোনো নেতা নতুন দল গঠনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক মহলে এসব দল ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিত।

নির্বাচনকে সুষ্ঠু দেখানোর জন্য সরকারের নির্দেশে এসব দলের উত্থান হয় বলে প্রচলিত আছে। আর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অপরিচিত এসব দলের সাড়াশব্দ থাকে না বললেই চলে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শমসের-তৈমূরের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএম এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি বা বিএসপি ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

শমসের মবিন চৌধুরী এবং তৈমুর আলম খন্দকারের দল তৃণমূল বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে ১৩৩টি আসনে প্রার্থী দেয়। তবে কোনও আসনেই দলটির কোনও প্রার্থী জয়ী হতে পারেনি। উল্টো বেশির ভাগ প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

সেই তৃণমূল বিএনপিরই নেতা শমসের মবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই দলগুলোর নেতাদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কয়েকটি দলের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন ধারণা পেয়েছে ঢাকা টাইমস।

‘কিংস পার্টি’ বলে অভিহিত আরেকটি দল হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র পাঁচ মাস আগে ২০২৩ সালের আগস্টে দলটি নিবন্ধন পায়।

২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আরেক দলছুট নেতা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর বিএনএমে যোগ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। পরে গত ৩০ জুন তিনি দলটির পূর্ণাঙ্গ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। তার সঙ্গে মহাসচিব হিসেবে আছেন অধ্যাপক ড. আবদুর রহমান।

সবশেষ ডামি নির্বাচন বলে আখ্যা পাওয়া গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নোঙর প্রতীক নিয়ে বিএনএম ৫৪টি আসনে প্রার্থী দেয়। তবে দলটির কোনও প্রার্থীই এই নির্বাচনে জয় পাননি। বরং একজন বাদে দলের সব প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তার মধ্যে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরও আছেন।

‘কিংস পাটি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আরেকটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই দলটিও ৭৯টি আসনে প্রার্থী দেয়। তাদেরও কোনও প্রার্থীই জয়লাভ করেননি।

জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে উঠা এসব রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘পুতুল দল’ হিসেবে অভিহিত করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দলীয় সরকার নিজেদের সুবিধা নিতে যেভাবে চায় ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত দলগুলো ঠিক সেভাবেই আচরণ করে বলে তাদের অভিমত।

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ধাওয়া খেয়ে পিছু হটল ভারতের চার যুদ্ধবিমান
নিজের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বিচার চাইলেন রাশেদ খান
এসপি পদমর্যাদার ১৪ কর্মকর্তার বদলি
হঠাৎ 'আত্মগোপনে' পালং মডেল থানার পরিদর্শক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা