রাজধানীর ফাঁকা সড়কে বেপরোয়া গতির অটোরিকশার রাজত্ব

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে শহর ছেড়ে কয়েক লাখ মানুষ এখন গ্রামে। রাজধানীর রাজপথ থেকে অলিগলি প্রায় সবই ফাঁকা। নেই চিরচেনা যানজট, আছে গণপরিবহন সংকটও। এই সুযোগে সড়ক-মহাসড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে রাজত্ব করছে অটোরিকশা।
তুলনামূলক কম ভাড়া এবং দ্রুতগতির কারণে অটোরিকশাকে বেছে নিচ্ছেন নগরবাসী। অন্যদিকে, তিন চাকার এই বাহনটির বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে হরহামেশাই।
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক বিভাগের তথ্য বলছে, ঈদের আগে-পরে ৫ দিনে অটোরিকশার কারণে ৫০টিরও বেশি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক। এ অবস্থায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নগরবাসীকেও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। অন্যদিকে অটোরিকশার অবাধ চলাচল ঠেকাতে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বেশ কয়েকজন প্যাডেলচালিত রিকশাচালক ঢাকা টাইমসকে জানান, অটোরিকশার জন্য তাদের ইনকাম কমেছে প্রায় তিনগুন। ৫০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা বললেও অটোরিকশাচালকরা যাত্রীদের গন্তব্যে নিয়ে যায়। সিএনজি চালকদের অভিযোগ, অটোরিকশাগুলোতে তিন-চারজন করে যাত্রী বহন করে। এতে করে সিএনজির যাত্রীরাও অটোরিকশায় যাতায়াত শুরু করেছে।
বাসের চালকরা বলেন, এই গাড়িগুলোর ব্রেকের ঠিক নেই। গাড়িগুলোকে মূল সড়ক দিয়ে চলতে দেওয়া উচিত না। অটোরিকশাগুলো খুবই বেপরোয়া গতির। ওদের জন্য গাড়ি চালানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। পুরো রাস্তাই যেন ওদের। প্রশাসন পদক্ষেপ নিলে এই গাড়িগুলো মূল সড়কে চলতে পারবে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, ‘ঈদে গণপরিবহন কম থাকায় যাত্রীরা বিকল্প হিসেবে অটোরিকশায় চলাচল করছে। তবে মূল সড়কে যেন অটোরিকশা উঠতে না পারে, এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। এছাড়া তাদের ধরা হচ্ছে এবং সড়ক অটোরিকশামুক্ত করতে অভিযান আরও জোরদার করব।’
পাশাপাশি দ্রুতগতির এই বাহনটি রাজধানীর সড়ক থেকে সরাতে যাত্রীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান ট্রাফিকের এই কর্মকর্তা।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সদস্য মাহমুদুল বলেন, ‘যারা অটোরিকশায় চড়বেন, তাদের অত্যধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চালককে উদ্বুদ্ধ করবেন ধীরেসুস্থে চালাতে। যেসব রাস্তায় এগুলো চলাচল নিষিদ্ধ, সেসব রাস্তা যাত্রীরা যেন ব্যবহার না করেন।’
বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুল নেওয়াজ বলেন, ‘থ্রি হুইলার ও ব্যাটারিচালিত রিকশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বাংলাদেশে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। এই গাড়িগুলো যারা চালাচ্ছে, তারা যেমন অনিরাপদ, তেমনি গাড়িগুলোও অনিরাপদ। ব্রেক করতে পারে না, ডানে-বামে চলে আসে।’
তিনি মনে করেন, ‘অটোরিকশাগুলো যেখানে চার্জ দেওয়া হচ্ছে, সে জায়গাগুলো বন্ধ করা দরকার। এছাড়া নির্দিষ্ট রাস্তা ছেড়ে মূল সড়কে যে গাড়িগুলো উঠতে না পারে, সে ব্যাপারটাও স্ট্রংলি মনিটরিং করা উচিত।’
(ঢাকাটাইমস/৩এপ্রিল/এলএম/এজে)

মন্তব্য করুন