প্রবাসীর পাঠানো স্বর্ণ আত্মসাৎ ‘লাগেজ পার্টির’, গ্রেপ্তার অভিযানে পুলিশ

দুবাই প্রবাসী মো.সামীম সানার নামে এক প্রবাসীর কষ্টার্জিত অর্থে কেনা ২০১ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার দেশে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সেগুলো আত্মসাৎ করেছে ‘আন্তর্জাতিক লাগেজ পার্টির’ ঢাকার একটি চক্র। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে পল্লবী থানায় একটি প্রতারণা মামলা হয়েছে।
সোমবার রাতে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, স্বর্ণ আত্মসাৎ এর অভিযোগ সামীম সানা নামের এক ব্যক্তি পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরে তদন্তের জন্য অভিযুক্ত আমিরুজ্জামান আমিরের (৪৮) অফিসে পুলিশ গেলে তিনি পুলিশের উপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে তারা স্বর্ণের বিষয়টি স্বীকার করে পুলিশকে মীমাংসার আশ্বাস দেন। তবে পরবর্তীতে পুলিশ সেখান থেকে আসার পরে পুলিশ ও ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় চক্রটি। স্বর্ণ আত্মসাতের এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতারণা মামলা রজু হয়েছে।
এ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
এ বিষয় ভুক্তভোগী সানা বলেন, চক্রটি ভয়ংকর একটি প্রতারণা চক্র। আমার অভিযোগের তদন্তে গেলে পুলিশকে ঘটনার সত্যতা শিকার করে স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় প্রতারক আমির। কিন্তু পরবর্তীতে স্বর্ণগুলোতো ফিরিয়ে দেননি, উল্টো বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশসহ ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রতারক চক্রটি। এ ঘটনায় পুলিশের আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, ও ডিসি মিরপুরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান ভুক্তভোগী সানা।
অভিযোগপত্রে সানা উল্লেখ করেছেন, মো. আমিরুজ্জামান আমিরের জিম্মায় আমি ২০১ গ্রাম স্বর্ণালংকার দুবাই থেকে ক্রয় করে বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দেই। যার বাজারমূল্য ২৬ লাখ টাকা। আমির স্বর্ণালংকারগুলো তার আত্মীয় মো. ইব্রাহীম খান রানা ও জহির আহম্মেদের মাধ্যমে গ্রহণ করেন, যার ভিডিও ফুটেজ ও ওডিও প্রমাণ আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। তারা ২৮ মার্চ স্বর্ণ হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে এবং প্রতারণামূলক আচরণ করে। শুধু তাই নয়, পুলিশের কাছে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দেয় এবং আমাকে হত্যার হুমকিও প্রদান করে আমির। পরবর্তীতে ঘটনাটি নিয়ে আমি পল্লবী থানায় গেলে পুলিশ আমিরের অফিসে তদন্তে যায়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি মালামাল গ্রহণের কথা স্বীকার করে আপোষ-মীমাংসার কথা বললে পুলিশ ফিরে আসে। কিন্তু এরপর সে পুলিশ ও আমার বিরুদ্ধে অনলাইনে অপপ্রচার চালায়।
সানা আরও জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পারি, আমির একজন ভূমিদস্যু ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে পল্লবীসহ বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তিনি সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দেন এবং আন্তর্জাতিক লাগেজ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাকছুদের রহমান বলেন, শামীম সানা নামের এক প্রবাসী অভিযোগ দিয়েছিল। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নিতে পল্লবী থানায় অভিযোগটি পাঠিয়েছি।
(ঢাকাটাইমস/২৮এপ্রিল/এলএম/এমআর)

মন্তব্য করুন