ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা পাকিস্তানের

পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কূটনৈতিক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে এবং কাশ্মীর হামলায় ইসলামাবাদ জড়িত বলে ভারত সরকারের দাবির সমর্থনে প্রমাণ দাবি করেছে।

সন্দেহভাজন বিদ্রোহীরা মঙ্গলবার পহেলগামের মনোরম পর্যটন কেন্দ্রে কমপক্ষে ২৬ জনকে হত্যা করেছে, যা ভারত শাসিত কাশ্মীরে গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে জারি করা একটি বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে, যা পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা বলে মনে করা হয়।

বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ভাষণে পহেলগাম বন্দুকধারীদের ‘পৃথিবীর শেষ প্রান্ত’ পর্যন্ত খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নয়াদিল্লি পানিবণ্টন চুক্তিতে ভারতের অংশগ্রহণ স্থগিত করেছে এবং অন্যান্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে তার প্রধান স্থল সীমান্ত সিল করে দিয়েছে।

সিন্ধু পানিচুক্তি থেকে ভারত প্রত্যাহার করার একদিন পর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও একটি খাল সেচ প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন, যা পাকিস্তানের পানি সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

শরীফ তার দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেন,, পাকিস্তান [ভারত-শাসিত কাশ্মীরে] পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন থাকলেও কমিটি ২৩ এপ্রিল ঘোষিত ভারতীয় পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করেছে এবং সেগুলোকে একতরফা, অন্যায্য, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং আইনি যোগ্যতাহীন বলে অভিহিত করেছে।

“কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত এবং যাচাইযোগ্য প্রমাণের অভাবে পহেলগাম হামলাকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টা অসার, যুক্তিহীন এবং পরাজিত যুক্তি,” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ পরে আল জাজিরাকে বলেন, “আমি ভারত সরকারের আরোপিত অভিযোগগুলোকে প্রত্যাখ্যান করছি, দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।”

ভারতশাসিত কাশ্মীরে কর্মরত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে দেশটির কোনও সম্পর্ক নেই- যোগ করেন তিনি।

ইসলামাবাদ ভারতের সঙ্গে ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধের ঘোষণাও দিয়েছে। তবে বলেছে যে এটি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত খোলা থাকবে। শিখ তীর্থযাত্রী ব্যতীত সব ভারতীয় নাগরিককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান সার্ক কর্মসূচির অধীনে ভারতীয়দের জন্য প্রদত্ত ভিসা স্থগিত করেছে। ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ৩০-এ কমিয়ে এনেছে এবং সমস্ত ভারতীয় বিমানের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে, একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

পাকিস্তানের হরিপুর থেকে রিপোর্ট করতে গিয়ে আল জাজিরার কামাল হায়দার বলেন, “এটি ছিল প্রতিপক্ষের প্রতিক্রিয়া।”

"সকলের নজর থাকবে ভারত পরবর্তীতে কী করে তার উপর। কারণ মোদি বলেছেন যে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে। তিনি ভারতে তার দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন। তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ হবে।” তিনি বলেন।

“কিন্তু ইসলামাবাদও তার কথায় ভুল করে বলেনি যে পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও যেকোনো সামরিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দেওয়া হবে,” তিনি আরও বলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/এফএ)