আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে, এটা সামষ্টিক ব্যর্থতা: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০২ মে ২০২৫, ২০:১১| আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ২০:১৬
অ- অ+

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে, এটা আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। বিচার ও সংস্কারের জন্যই মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। গণহত্যা চালানোর দায়ে আওয়ামী লীগকে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও নিষিদ্ধ করতে না পারায় হতাশ বোধ করছি।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এলাকায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ এনে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিস্ট দলে পরিণত হয়েছে। দলটির নিবন্ধন বাতিল করে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। নৌকা মার্কাকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। সরকার যদি বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে জনতার আদালতেই আওয়ামী লীগের বিচার হবে।

নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের অযোগ্য ঘোষণা করতে নির্বাচন কমিশন আগ্রহ দেখায় না। তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণাকারী অংশ হয়ে গেছে।

সাংবাদিকদের সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে খুনি বলা যায় কি না– এ প্রশ্ন করে, তারা সাংবাদিক না, তারা ফ্যাসিস্টদের দোসর।

সমাবেশে এনসিপির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টালবাহানা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হবে, এই সিদ্ধান্ত জনগণ গত বছরের ৫ আগস্টেই দিয়েছে। এরপরও কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে জুলাই যোদ্ধারা তাদের প্রতিহত করবে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্ন অমীমাংসিত রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দল মিলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালিয়েছে, গণহত্যা করেছে, দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। সেই দলটি আর কোনোভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি করার অধিকার রাখে না।

তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্নে বলেন, যে সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এসেছে, সেই সরকারের ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করতে হবে। সুশীল তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের মধ্যে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, সেটি সরকারের প্রকৃত ক্ষমতার ভিত্তি।

আখতার হোসেন আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন রয়েছে কিন্তু আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই– আওয়ামী লীগের নাম নিবন্ধন খাতা থেকে কেটে দিতে হবে। এটি কোনোভাবেই দেশ পরিচালনার জন্য উপযুক্ত দল নয়।

জাতীয় পার্টির সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ছিল আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের প্রতিষ্ঠাতা। আজও তারা দেশে স্বৈরাচারের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, তাদের দোসর এবং যারা রাজনৈতিক দল বা সুশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত– তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করা রোগীরা এখনো হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে আর আহাজারি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে যারা নিপীড়িত হয়েছেন, তাদের কেউ এখনো বিচার পায়নি। দলটির মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। বরং তারা আবার নির্বাচনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

(ঢাকাটাইমস/০২মে/জেবি/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কৃত্রিম চিনি জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, বিকল্প হিসেবে যেসব খাবার খাবেন
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৩ জন নিহত
থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় দুই পুলিশকে সন্দেহভাজন আসামির হাতুড়িপেটা
ভেষজ দেশি গাব ক্যানসার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা