গুলশানে রাজউকের ৫ কোটির ‘রূপসা অ্যাপার্টমেন্ট’ কারা নিয়েছে, নাম জানুন

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনেকটা গোপনেই নিজেদের পছন্দের লোকদের রাজউকের রূপসা অ্যাপার্টমেন্ট (গুলশান ওয়েস্টিনের পেছনে) প্রকল্পের ফ্ল্যাটের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এই তালিকায় রাজনৈতিক নেতা, তাদের সন্তান, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা কিংবা তাদের সন্তানরা রয়েছে।

তালিকায় থাকা বাকিরা কোনো না কোনোভাবে সরকারি কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবে এসব মূল্যবান ফ্ল্যাট তুলনামূলক কম দামে বরাদ্দ পেয়েছেন।

এখন প্রশ্ন আসছে, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ফ্ল্যাট প্রশাসন ক্যাডারের লোক বা সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে কিনলেন? বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের একটি বরাদ্দ পান রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম। তিনি কীভাবে এই ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেলেন তা নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন।

তাছাড়া আরও যারা কয়েক কোটি টাকা দামের ফ্ল্যাট নিয়েছেন তাদের আয়ের উৎস কী? কেনই বা এসব ফ্ল্যাট-প্লট বরাদ্দ বাতিল হবে না— এমন প্রশ্ন তুলেছেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন খান সায়ের সামি। নিজের ফেসবুকে প্রকল্পটির (রূপসা অ্যাপার্টমেন্ট) বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণ সহ একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি।

বিলাসবহুল এই ফ্ল্যাট ও প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন এই তালিকায় সাবেক এমপি, রাজউকের সদস্য, সরকারি সাবেক আমলাসহ অনেকে রয়েছেন। তালিকায় নাম রয়েছে— খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. জালাল আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হায়দার ভূঁইয়া, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স (আর্মি) সাবেক পরিচালক সিদ্দিক মোহাম্মদ জুলফিকার রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও বিডার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, সাবেক আইজিপি ও সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, সাবেক সচিব মাহবুবুর রহমান সরকার, রাজউকের সাবেক সদস্য ইমরান কবির চৌধুরী, রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট) নূরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য জহিরুল ইসলাম মোহনের কন্যা ইফফাত জাহান এমি, প্রশাসন ক্যাডার ডা. এম. নাসির উদ্দিন মুনশি, সাবেক সচিব এস. এম. কামরুল হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিমের ভাই আশেকুর রহিম, যুগ্ম-সচিব মিনাক্সি বর্মন।

সাংবাদিক সামি লিখেছেন, সাড়ে ১৪ হাজার টাকা স্কয়ার ফিট হিসেবে ৩০৯৯ স্কয়ার ফিট ফ্ল্যাটের দাম পড়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। গাড়ি পার্কিং ও ইউটিলিটি স্পেসের দাম ছাড়া এসব ফ্ল্যাট কিনতে হয়েছে। প্রশ্ন হলো- কীভাবে তারা কয়েক কোটি টাকা দিয়ে এসব বরাদ্দ পেলেন? টাকাই বা কোথায় পেলেন? আর বরাদ্দ-ই বা কোন প্রক্রিয়ায় হয়েছে?—এসব অনুসন্ধান প্রয়োজন।

(ঢাকা টাইমস/১৭জুন/এসএস/এসএ)