মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা
দুর্ঘটনার পর চিকিৎসা ব্যবস্থাও সড়ক নিরাপত্তার অংশ হওয়া উচিত

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ১১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। এদের ৯২ শতাংশই নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের বাসিন্দা। এর মধ্যে পথচারী, সাইকেল আরোহী ও মোটরসাইকেল আরোহীরাই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হন।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের আয়োজনে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন সকলের জন্য প্রয়োজন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির রোড সেফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান।
তিনি জানান, বিশ্বের ১৮৩টি দেশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০৬তম। বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সড়ক পরিবহন খাতের দিকে কেন্দ্রিত হলেও, সার্বিক সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ আইন যথেষ্ট নয়। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে একটি সমন্বিত ও কার্যকর ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন দৈনিক মানবজমিন-এর সিনিয়র সাংবাদিক শুভ্র দেব। আলোচনায় অংশ নেন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সাধারণ সম্পাদক ও ইউএনবি’র বিশেষ প্রতিনিধি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক ইত্তেফাক-এর সিনিয়র সাংবাদিক জামিউল আহসান শিপু এবং দৈনিক যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিনিধি ইমন রহমান।
আলোচকরা বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে শুধু পরিবহন খাত নয়, বরং সড়ক অবকাঠামো, যানবাহনের মান, ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা, দুর্ঘটনার পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন জাতিসংঘের সুপারিশকৃত পাঁচটি মূল স্তম্ভকে ভিত্তি করে একটি পূর্ণাঙ্গ, আধুনিক ও বাস্তবমুখী সড়ক নিরাপত্তা আইন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সেই পাঁচটি স্তম্ভ হচ্ছে— বহুমুখী যানবাহন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, নিরাপদ সড়ক ব্যবহার এবং রোডক্র্যাশ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা।
সমাপনী বক্তব্যে মোখলেছুর রহমান বলেন, বিদ্যমান আইনগুলো পরিবহন পরিচালনা সংক্রান্ত হলেও, একটি কার্যকর নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে এর বাইরে আরও বিস্তৃত পরিধির একটি সমন্বিত আইন দরকার।

মন্তব্য করুন