নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে জিয়ার মাজারে ছাত্রদল নেতা, কারণ দর্শানোর নোটিশ

বালু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির অডিও ফাঁস হওয়ার পর এবার নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরাম চৌধুরী। এবার তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে নিয়ে জিয়ার মাজার জিয়ারত করেছেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল।

জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার অধীন ফটিকছড়ি ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছেলেদের নিয়ে দলীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। এই কাজটি সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। তাই সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা পাঁচ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দানের নির্দেশ দেওয়া হলো।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন রুবেল বলেন, ‘সংগঠনবিরোধী কাজের মাধ্যমে ছাত্রদলের ইমেজ ক্ষুণ্ন করে কেউ পার পাবে না। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি জবাব দেবেন। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে অতীতের যে সব অভিযোগ ছিল, তাও খতিয়ে দেখা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের নবঘোষিত কমিটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে গেলে পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরাম চৌধুরী কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ সময় ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ছাত্রলীগের কর্মী মো. রায়হানকে তার সঙ্গে করে নিয়ে যান। মাজার জিয়ারতের পর তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ছবিগুলো একরাম চৌধুরী তার ফেসবুকে দিলে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি জেলা ছাত্রদলের নজরে আসার পর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

তবে একরাম চৌধুরী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে একটি পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এর আগে গত ১৪ এপ্রিল বালুর গাড়ি থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগে একরাম চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল। সে সময় বালু পরিবহনে চাঁদা দাবির একটি অডিও ভাইরাল হয়।

বিষয়টি জেলা ছাত্রদল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পর্যন্ত গড়ায়। তবে তৎকালীন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নমনীয়তা এবং চট্টগ্রামের এক কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতার হস্তক্ষেপের কারণে একরামের বিরুদ্ধে দল থেকে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/জেবি/মোআ)