মুরাদনগরকাণ্ডে নতুন মোড়, মামলা তুলে নিতে চান নারী

নতুন মোড় নিয়েছে মুরাদনগর নারী নির্যাতন কাণ্ড। মামলা তুলে নিতে চান ওই ভুক্তভোগী নারী। তার দাবি, তিনি না বুঝেই এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা না বলে মামলা করেছেন। এখন স্বামীর চাপে মামলা তুলে নেবেন।
এদিকে নতুন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ‘তোদের বাপ আইছে’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ আলী সুমনের নেতৃত্বে রমজান, অনিক, আরিফসহ ১৫-২০ জনের একটি দল ধর্ষণে অভিযুক্ত ফজর আলীকে বিবস্ত্র করে পৈশাচিকভাবে নির্যাতন চালায়। তাকে বিবস্ত্র করে বেঁধে নির্যাতনের ফলে তার শরীর হাত ও মাথা থেকে রক্ত ঝরছে। অন্যদিকে অনিক ওই নারীকে বিবস্ত্র ফজর আলীর সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ভিডিও ধারণ করে।
ঘটনার পরদিন ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগে মুরাদনগর থানায় মামলা করেন। পুলিশ পৃথক দুই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
প্রথমে নারী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তরা বিএনপির কর্মী বলে দাবি করে প্রচার চালানো হয়। পরে বেরিয়ে আসে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
ভুক্তভোগী নারী এখন বলছেন তার ভুল হয়েছে। তিনি মামলা তুলে নেবেন। গতকাল রাতে তিনি বলেন, ‘আমি না বুঝেই ফজর আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেছি। পরিবার ও এলাকার কারো সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই মামলা করে আমি এখন আমার স্বামীর চাপের মুখে আছি। স্বামী ও আমার পরিবারের লোকজন মামলা চালাতে অনীহা প্রকাশ করছে। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই। আমি মামলাটি তুলে নেব।’
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এবং ওই নারী ও ফজর আলীর বিবস্ত্র ছবি ভাইরাল হয়।
তবে এ ঘটনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সুমন নেপথ্য কারিগর বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিকল্পিতভাবে নারীকে বিবস্ত্র ও নির্যাতন করে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে তারা।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, ‘ওই নারী ও ফজর আলীর মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। দুই মাস আগে ফজর আলীর ছোট ভাই শাহপরান ওই নারীর সঙ্গে তার ভাইয়ের পরকীয়া নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। তাদের পরকীয়ার বিষয়টি আমাদের এলাকার সবাই জানে। এছাড়া ওই পরিবারের সঙ্গে ফজর আলীর আর্থিক লেনদেন রয়েছে। সেই সুবাদে ফজর আলী ওই বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো।’
ভুক্তভোগী নারীও স্বীকার করেন তার সঙ্গে ফজর আলীর আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। এই ফজর আলীও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা। তাকে বিএনপির কর্মী বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ঘটনাটিকে এত বড় করার নেপথ্যের কারিগর হলো নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সুমন। তারা আগে থেকে ওঁৎ পেতে থেকে ওই নারী ও ফজর আলীকে ধরে। পরে পরিকল্পিতভাবে বিবস্ত্র ও নির্যাতন করে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে।’
মামলার অগ্রগতি নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, তারা নতুন কোনো ভিডিও এখনো দেখেননি। তারা মামলাটি অধিকতর তদন্তের কাজ করছেন।
(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/মোআ)

মন্তব্য করুন