একজন জনবান্ধব নারী এসিল্যান্ড হাসিনা আক্তার

সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:৪৬ | প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:৩৫

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে জনগণের অভাব-অভিযোগই কেবল শোনা যায় নিত্য। তবে তাদের মাঝে বতিক্রমও পাওয়া যায়, যারা নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে জনগণের আস্থা ও প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন। হয়রানি থেকে মুক্তি দেন মানুষকে, নিজের সরকারি দপ্তরকে করে তোলেন জনবান্ধব। তেমনই একজন সরকারি কর্মকর্তা মোছাম্মদ হাসিনা আক্তার। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এই সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) মাত্র দেড় বছরে এখানে সবার কাছে প্রিয় কর্মকর্তা হয়ে ওঠেন তিনি।

যেখানে ভূমি অফিস মানেই ভোগান্তি, টাকার ছড়াছড়ি; সাধারণ মানুষের হয়রানি আর অসহায়তার জায়গা, সেখানে একটি স্বচ্ছ, ঘুষবিহীন ও জবাবদিহিতামূলক সেবা কার্যক্রম পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন মোছাম্মদ হাসিনা আক্তার। তার নেতৃত্বে পাকুন্দিয়া ভূমি অফিসের সব নৈরাজ্য দূর হয়ে সেখানে তৈরি হয়েছে আস্থার পরিবেশ। এ উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।

উপজেলার পাটুয়াভাঙা ইউনিয়নের কুমড়ী গ্রামের বাসিন্দা শামসুল হক আকন্দ একটি মিসকেস (অন্যের নামে জমা খারিজ সংক্রান্ত) মামলা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছিলেন তিনি। অবশেষে এসিল্যান্ড হাসিনা আক্তারের মাধ্যমে ওই মিসকেস মামলা নিষ্পত্তি হয়।

বুরুদিয়া ইউনিয়নের মান্দারকান্দি গ্রামের ভূমিহীন হোসনা আক্তার বলেন, ‘পাঁচ বছর বেদখল থাকার পর এসিল্যান্ড ম্যাডামের মাধ্যমে ওই বেদখলকৃত সম্পত্তি বুঝে পাই।’

এ ছাড়া এসিল্যান্ড হাসিনা আক্তারের নেতৃত্বে উপজেলার ১০টি বেদখলকৃত সরকারি পুকুর উদ্ধার হয়। এমন অসংখ্য ভালো কাজ করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন এ ভূমি কর্মকর্তা।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরর প্রিয় স্যঅর ছিলেন হাসিনা আক্তার। ভ’মি অফিসের নাজির মো. শাহ আলম বলেন, ‘স্যার (এসিল্যান্ড) একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ। আমরা ওনার আন্ডারে কাজ করতে পেরে আনন্দিত।’

এ উপজেলায় দায়িত্বপালন করতে গিয়ে হাসিনা আক্তার খাস জমি, খাস পুকুর নিয়ে কাজ করেছেন। ভূমি অফিসকে দালালমুক্ত করে গতিশীল করেছেন। এ ছাড়া জমিসংক্রান্ত সব ধরনের সেবাগ্রহিতার অধিকার নিশ্চিত করে সবার কাছে ভূমি অফিসকে সহজ, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্য করে গড়ে তুলেছেন এ কর্মকর্তা। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে যৌন হয়রানি, অবৈধ বালু উত্তোলনসহ ভেজালবিরোধী অভিযান গতিশীল করেছেন।

মোছাম্মৎ হাসিনা আক্তার ২৯তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন সদস্য। সম্প্রতি তিনি সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। এক বছর পাঁচ মাস এ উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ১ ডিসেম্বর অবমুক্ত হয়ে পরবর্তী পদায়নের জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার অফিসে ন্যস্ত হয়েছেন।

ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ধীতপুর গ্রামে জন্ম এ কর্মকর্তার। বাবা শিক্ষক, মা গৃহিণী। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে যোগ দিয়েছিলেন। পরে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুযোগ পেয়ে মৌলভীবাজার ডিসি অফিসে যোগদান করেন। এরপর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এসিল্যান্ড হিসেবে যোগ দেন।

এক মেয়ে ও ছেলে সন্তানের জননী হাসিনা আক্তারের স¦ামী পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

আমৃত্যু সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের জন্য কাজ করার জন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/১৪ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :