ফাঁসতে যাচ্ছেন অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামান! কী অভিযোগ তার বিরুদ্ধে?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০১ মে ২০২৪, ১৫:২০ | প্রকাশিত : ০১ মে ২০২৪, ১৪:৫৫

পুলিশের পোশাক পরে আওয়ামী লীগ নেতা ভাইয়ের পক্ষে মনোনয়ন ফরম তুলে বিপাকে পড়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। এরই মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

মঙ্গলবার রাতেই তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বুধবার দুপুরে ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেন এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর।

তিনি বলেন, “মঙ্গলবার রাতেই তাকে কারণ দর্শাতে চিঠি দিয়েছে সদর দপ্তর। তবে কতদিনের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে হবে সে বিষয়ে সঠিকভাবে বলতে পারছি না।”

এর আগে জাতীয় নির্বাচনে স্ত্রীর পক্ষে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সাময়িক বরখাস্ত হন বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হামিদুল আলম। একই ঘটনা ঘটতে পারে মো. মনিরুজ্জামানের ক্ষেত্রেও।

জানা গেছে, সোমবার ভাইয়ের জন্য ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন ফরম তুলতে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে যান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামান। এসময় তিনি পুলিশের পোশাকে ছিলেন। এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাই শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান ইকু ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামান ট্যুরিস্ট পুলিশের খুলনা-বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে আছেন। তার এমন কাণ্ডে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন উপনির্বাচনের অন্য প্রার্থীরা।

সম্প্রতি শৈলকুপার সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রায় দুই ডজন। ভোট হবে ৫ জুন।

উপজেলার ৭ নম্বর হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু এবার উপনির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তার বাবা প্রয়াত শিকদার মোশারফ হোসেন সোনা শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

ইকু দাবি করেন, তার বড় ভাই মনোনয়ন ফরম তুলতে ধানমন্ডিতে গিয়েছিলেন, তবে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে যাননি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনোনয়নপত্র তোলার ছবি ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। পুলিশের পোশাক পরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখে অনেকেই হতবাক হন।

তবে পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, তিনি সেখানে গিয়েছিলেন, আর ডিউটি থাকায় তিনি পোশাক পরেই অবস্থান করছিলেন। এটাকে দোষ মনে করেন না এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সরকারি কর্মচারী হিসেবে পুলিশ সদস্যদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে।

পুলিশের এই ধরনের আচরণ প্রত্যাশিত নয় বলে মনে করেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা। তিনি বলেন, “এভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশের পোশাক পরে অংশ নেওয়া চাকরির আচরণবিধির লঙ্ঘন। এটা কোনো প্রত্যাশিত আচরণ নয়।”

একই কাণ্ড করেছিলেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা

এর আগে অসুস্থতার দোহাই দিয়ে ২৮ দিনের ছুটি নিয়ে স্ত্রীর নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হামিদুল আলম। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পুলিশ ক্যাডারের ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা হামিদুল আলমের স্ত্রী শাহাজাদী আলম ওরফে লিপি বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। স্ত্রীর নির্বাচনে অংশ নিতে হামিদুল এক মাসের ছুটি নেন। এরপর সরকারি গাড়ি ও সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, যা দেশজুড়ে আলোচিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/০১মে/এসএস/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :