‘লাইফ স্টাইল পরিবর্তনে কমে ৬৮ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি’
শুধু লাইফ স্টাইল (জীবন আচরণ) পরিবর্তন করে ৬৮ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। এক গোলটেবিল আলোচনায় তারা বলেছেন, এই অভ্যাস গুলো হচ্ছে- প্রধানত প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা, পর্যাপ্ত ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ধূমপানমুক্ত থাকা।
আসন্ন বিশ্ব কিডনি দিবস-২০১৭ উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা শুক্রবার এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
কিডনি দিবস পালনে গৃহীত কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)’ জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্থুলতা কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়: সুস্থ কিডনির জন্য সুস্থ জীবন ধারা’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
ক্যাম্পাস এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম এ সামাদ এই গোলটেবিল বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশ রেনাল এসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ম. মহিবুর রহমান এবং অধ্যাপক ডা. আব্দুল হালিম বক্তৃতা করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সারা বিশ্বে এক তৃতীয়াংশ মানুষের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। প্রায় ৬৭ কোটি মানুষ স্থুল, যা জীবন সংহারী বহু রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলাদেশে প্রায় এক চতুর্থাংশ মানুষ স্থুল-একথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পৃথিবীতে যত মৃত্যু হয় পুষ্টিহীনতায় তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হয় অতিভোজন ও অতি ওজনের জন্য।
কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে ব্যাপকসংখ্যক কিডনি রোগীর তুলনায় ডায়ালাইসিস সেন্টার খুবই কম মাত্র ৯৬টি, এবং ১৮ হাজার রোগী এসব সেন্টারে সপ্তাহে দুইবার করে ডায়ালাইসিস পায়। বেসরকারি সেন্টারগুলোতে তিন হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত ডায়ালাইসিস মূল্য রাখা হয়।
এই চিকিৎসক বলেন, সাউথ এশিয়াতে মোট কিডনি রোগীর তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ রোগী ডায়ালাইসিসের সুযোগ পায়। বাকি বিশালসংখ্যক রোগী অর্থাভাবে ডায়ালাইসিস নিতে পারে না। তাই বাংলাদেশে ডায়ালাইসিস খরচ কমাতে সরকারি বেসরকারিভাবে বাস্তব উদ্যোগ নিতে হবে।
ডা. এম এ সামাদ বলেন, বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগের হার অত্যন্ত ব্যাপক। বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকলের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয় বহুল বিধায় এদেশের শতকরা ১০ জন রোগী এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারে না। অর্থাভাবে অকালে প্রাণ হারান সিংহভাগ রোগী। পক্ষান্তরে, একটু সচেতন হলে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের উপস্থিতি ও এর কারণ শনাক্ত করে তার চিকিৎসা করা।
(ঢাকাটাইমস/০৩মার্চ/জেবি)