‘ফেসবুকে কেন এত সিন্ডিকেট থাকবে?’

মাহমুদ উল্লাহ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:৫৯ | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:৫০

গত শুক্রবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে সমালোচকদের বিচারে সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেন চঞ্চল চৌধুরী। তিনি আয়নাবাজির ছবিতে অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যদিকে তারকা জরিপে সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার জিতেন শাকিব খান। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত শিকারি ছবির জন্য তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়।

সিনেমার বর্তমান সমস্যা নিয়ে গতকাল শনিবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। সেখানে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, দেশীয় সিনেমার চেয়ে এখন যৌথ প্রযোজনার সিনেমা বেশি হচ্ছে। সবার উচিৎ দেশিয় সিনেমাকেই প্রমোট করা, যৌথ প্রযোজনার সিনেমাকে নয়।

তার স্ট্যাটাসটি ছিল এমন, ‘আয়নাবাজি দিয়ে বাংলা সিনেমার কিচ্ছু হবে না...যারা নিজেদেরকে বাংলা সিনেমার ধারক ও বাহক মনে করেন, আসুন...আমরা সবাই যৌথ প্রযোজনার সিনেমা কে বেশি বেশি করে প্রোমোট করে উপরে তুলে, বাংলা সিনেমার ইজ্জত হরণ করি...অন্যের মা কে মা ডাকি...হায় রে অভাগা জাতি!!!!!! ফোকাস প্রবলেম এর জাতি!!! কাছের টাও দেখতে পায় না, দুরের টাও না...’

চঞ্চলের এই ফেসবুক স্ট্যাটাসকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তার পক্ষে-বিপক্ষে নানান মন্তব্য ও যুক্তি তুলে ধরা হয়। শাকিব খানের ভক্তরা চঞ্চলের স্ট্যাটাসের বিপক্ষে অবস্থান নেয়।

এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে চঞ্চল ঢাকাটাইমসকে বলেন,কাউকে উদ্দেশ্যে করে আমি কিছু বলিনি। অনেকে স্ট্যাটাসটি পড়ে অনেক ধরনের মন্তব্য করছেন। আমি কিন্তু সেখানে যৌথ প্রযোজনার বিরুদ্ধেও কিছু বলিনি। আমি যৌথ প্রযোজনায় তো মনের মানুষও করেছি। আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি অভিমান থেকে। পারসোনালি কাউকে কিছু বলিনি। চলচ্চিত্রে নিজের দায়বদ্ধতা থেকে বলেছি। কোন পুরস্কার পাওয়া নিয়েও আমি কিছু বলিনি। এটা পুরোটাই আমার ব্যক্তিগত নিজস্ব মতামত। আমিতো এর আগে ছয়বার মেরিল প্রথম আলে পুরস্কার পেয়েছি। এটা প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির কোন কথা না। আমরা নিজের মাকে ভালো না বেসে পরের মাকে কি ভালবাসবো? খালাকে কি মায়ের চেয়ে বেশি ভালোবাসবো? নিজেদের ছবির প্রতি দায়বদ্ধতা না রেখে যৌথ প্রযোজনার ছবিকে কি বেশি মূল্যায়ন করবো? যৌথ প্রযোজনার বিষয়টি কি একজনের দায়। না, এই দায় কারো একার না, এই দায় সবার। স্ট্যাটাসটিকে নিজের গায়ে মেখে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবার ধান্ধা করলে আমার কি বলার আছে। এখন যৌথ প্রযোজনার ছবি বেড়ে যাচ্ছে। দেশের ছবির প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে কথাগুলো বলেছি। আমার কি খেয়ে কাজ নেই কোন ইন্ডিভিজুয়াল ব্যক্তিকে নিয়ে আমি কথা বলবো। অনেকে মনে করেছেন আমি পুরস্কার পাইনি তাই এগুলো বলেছি।

আর একটা কথা, ফেসবুকে যেভাবে কিছু সিন্ডিকেটের মানুষ স্ট্যাটাসে এমন মন্তব্য করছে। এতেই বোঝা যায় দেশীয় ছবির বর্তমান অবস্থা। ফেসবুকে কেন এত সিন্ডিকেট থাকবে? তাহলে যৌথ প্রযোজনার বিষয়ে কি কেউ কিছু বলতেও পারবে না? কথাগুলো কাউকে ইন্ডভিজ্যূয়ালভাবে বলা হয়নি। এটা প্রযোজক, পরিচালক এবং যারা পুরস্কার দিয়েছে। সবার উদ্দেশ্যেই বলা। আমরা দেশি ছবি না যৌথ প্রযোজনার ছবিকে গুরুত্ব দিবো সেটাই বিষয়।

চঞ্চল আরো বলেন, ‘কোন ছবি কোন স্ট্যান্ডার্ডের, কোন অভিনয় কোন স্ট্যান্ডার্ডের তা আমরা সবাই জানি। এটা শিক্ষার ব্যাপার। যাদের শিক্ষাগত কোন যোগ্যতা নেই তাদের নিয়ে কথা বলারও কিছু নেই। আমরা চেয়েছি একটি আন্তর্জাতিক মানের একটি সিনেমা উপহার দিতে। আমরা অনেকটাই পেরেছি। আয়নাবাজি একটি আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা হয়েছে। মনপুরা প্রথমে তিনটি হল পেয়েছিলো, আয়নাবাজি ২০টি হল পেয়েছিলো। যাদের শিক্ষা নেই তারা এই ধরনের স্ট্যাটাসের মর্ম ফিল করতে পারেবে না। শিল্পবোধ সম্পন্ন হলে ছবি কোন স্ট্যান্ডার্ডে ফেলবে মানুষ তা বুঝবে।’

প্রসঙ্গত, এই অভিনেতা তার পরবর্তী সিনেমা নিয়ে খুব শিগগিরই দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছেন। হুমায়ুন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস নিয়ে অনুদানের সিনেমা তৈরি হচ্ছে। সেখানে তিনি মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। দর্শকরা দেবীর মাধ্যমে নতুন একজন চঞ্চল চৌধুরীকে দেখতে পাবেন।

ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এমইউ/এজেড

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :