হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের মারাত্মক ঝুঁকিতে মোটা মানুষরা
অনেকে মনে করেন মোটা হলেও শরীর ভালো এবং ফিট থাকে। কিন্তু এ ধারণা যে ঠিক নয় সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন গবেষকরা। ব্রিটেনে ৩৫ লাখ মানুষের ওপর চালানো এক গবেষণার ভিত্তি করে এ কথা বলছেন গবেষকরা।
এ গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মোটা ব্যক্তির জীবনের প্রথম দিকে কোন রোগ না থাকলেও পরবর্তী সময়ে তারা নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছেন। জীবনের প্রথম দিকে তাকে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ মাত্রার কোলেস্টরেল না থাকলেও পরবর্তী সময়ে তারা এসব দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন।
ইউরোপিয়ান ওবেসিটি কংগ্রেসে এ গবেষণাটির সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে।
একটা সময় ধারণা করা হতো কোনো ব্যক্তি মোটা হলেও তার রক্তচাপ এবং রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলে সে শারীরিক ফিট থাকতে পারে।
এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলে মোটা হওয়া কোন সমস্যা নয় বলে মনে করা হতো। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় এটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ গবেষণার উপাত্ত সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করেছেন।
এ গবেষণার শুরুতে যে ব্যক্তিদের বয়স এবং উচ্চতার অনুপাতে অতিরিক্তি ওজন ছিল তাদের সম্পর্কে তথ্য নেয়া হয়। যখন এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল তখন তাদের বয়স ছিল ত্রিশ কিংবা তার চেয়ে কিছুটা বেশি। তখন তাদের কোনো হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টরেল এবং ডায়াবেটিস ছিল না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, তারা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিতে পড়েছে। কিন্তু যাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে ছিল তাদের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের মাইক ক্ন্যাপটন মনে করেন, এ গবেষণাটিকে খুবই গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত।
‘এ গবেষণায় আমার কাছে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তা হলো- অতিরিক্ত ওজন এবং মোটা ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। অন্য দিক থেকে তারা স্বাস্থ্যবান থাকলে হৃদরোগের ক্ষেত্রে তাদের তাদের ঝুঁকি আছে’- বলছিলেন ক্ন্যাপটন।
সেজন্য ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন হৃদরোগের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে। ধুমপান না করা, সুষম খাবার গ্রহণ, প্রতিদিন ব্যায়াম করা এবং পরিমিত মাত্রায় অ্যালকোহল পান মানুষকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে।
এর আগে ২০১২ সালে এক গবেষণায় বলা হয়েছিল কোনো ব্যক্তির ওজন বেশি এবং মোটা হলেও তিনি শারীরিকভাবে ফিট থাকতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় তার হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি নেই। কিন্তু নতুন গবেষণা সে ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
সূত্র: বিবিসি
(ঢাকাটাইমস/১৭মে/এসআই)
মন্তব্য করুন