পুঁজিবাজার: ব্যাংকের মত ভাল করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানও
পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি আর্থিক খাতও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি এই খাতের কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগও বছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি লাভ করেছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে বছরে চার বার তাদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। ১২ মাসকে তিন মাস কওে ভাগ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি প্রতিবেদন হয় অনিরীক্ষিত প্রতিবেদক, আর সবশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে হয় হিসাব নিরীক্ষা করে।
পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে। এবং বিনিয়োগকারীরা এসব প্রতিবেদন দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এখন পর্যন্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ২১টির প্রথম প্রান্তিÍকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে আগের বছরের একই বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস বেড়েছে ১৪টির, লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে একটি, মুনাফা কমেছে দুইটির, লোকসান কমেছে তিনটির। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর লোকসান বেড়েছে কেবল একটির। অন্য দুই প্রতিষ্ঠান বাকি বিআইএফসি ফাইন্যান্স এবং পিপলস লিজিং এখন পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।গত বছরের তুলনায় লাভে যেসব কোম্পানি
ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-আইসিবি: আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩.৩৮ টাকা। গত বছর একই সময় এই আয় ছিল ০.০৮ টাকা। সে হিসেবে প্রতিষ্ঠানের ইপিএস বেড়েছে ৩.৩০ টাকা বা চার হাজার ১২৫ শতাংশ।
ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট: প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৬৭ পয়সা। যা গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি লোকসানে ছিল। ওই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ২৮ পয়সা। সেই তুলনায় কোম্পানিটির গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৯৫ পয়সা।
লংকা বাংলা ফাইন্যান্স: জানুয়ারি- মার্চ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৯৪ পয়সা, যা গত বছর ছিল ২৯ পয়সা। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে কোম্পানির আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় হয়েছে তিন গুণেরও বেশি।
বিডি ফাইন্যান্স: প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ০.৬৯ টাকা। যা গত বছর একই সময়ে ছিল ০.২১ টাকা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ৪৮ পয়সা বা ২১৯ শতাংশ।
প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স: বছরের প্রথম ৩ মাসে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৪৪ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে এটি ছিল ১৫ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিন গুণ আয় বেড়েছে কোম্পানিটির।
মাইডাস ফাইন্যান্সং: প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬৫ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩২ পয়সা। সে হিসেবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ০.৩৩ টাকা বা ১০৩.১২ শতাংশ।
ইসলামিক ফাইন্যান্স: প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫৮ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৫ পয়সা। সে হিসেবে বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ইউনিয়ন ক্যাপিটাল: জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫১ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৯ পয়সা। সে হিসেবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ৩২ পয়সা বা ১৬৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আইডিএলসি: কোম্পানিটি গত ৩১ মার্চ সমাপ্ত প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৮৬ পয়সা আয় করেছে। গত বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১ টাকা ১১ পয়সা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় বেড়েছে ৭৫ পয়সা বা ৬৭ শতাংশ।
জিএসপি ফাইন্যান্স: প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ০.৬৪ টাকা, যা গত বছরে একই সময়ে ছিল ০.৪৫ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ০.১৯ টাকা বা ৪২.২২ শতাংশ।
বে-লিজিং: কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ২৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১৯ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস পাঁচ পয়সা বেড়েছে, শতকরা হিসাবে যা ২৫ শতাংশের বেশি।
ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং: ডিবিএইচের প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বা ৪২ পয়সা বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩.০৩ টাকা। যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২.৬১ টাকা।
উত্তরা ফাইন্যান্স: প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১১.৪৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২.২৪ টাকা, যা গত বছরে একই সময়ের একই সময় ছিল ২.০১ টাকা।
ফিনিক্স ফাইন্যান্স: প্রথম ৩ মাসে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৫৮ টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে এটি ছিল ৫৫ পয়সা। সে হিসেবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ০.০৩ টাকা বা ৫.৪৫ শতাংশ।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪২ পয়সা। যা গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০ পয়সা। সে হিসেবে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ০২ পয়সা বা ৫ শতাংশ।
লাভে কিন্তু গত বারের চেয়ে আয় কমেছে
ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স: প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ০.৫৬ টাকা। গত বছর একই সময়ে ইপিএস ০.৬১ টাকা। অর্থাৎ এই কোম্পানির ইপিএস কমেছে ৫ পয়সা।
ইউনাইটেড ফাইন্যান্স: প্রথম তিন মাসে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৩৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এটি ছিল ৪০ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস তিন পয়সা কমেছে। লোকসান কমেছে
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স: এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান কমেছে। প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০.০৬ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ০.১৫ টাকা।
ফার্স্ট ফাইন্যান্স: এই কোম্পানিটি প্রথম প্রান্তিকে লোকসান করেছে। গত বছরও একই সময়ে কোম্পানি লোকসানে ছিল। তবে চলতি বছর এই লোকসান কমেছে। প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছে ০.৮৩ টাকা, যা বছর একই সময়ে ছিল ১.০৫ টাকা।
প্রাইম ফাইন্যান্স: গত কয়েক বছর ধরে লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি এবারও প্রথম প্রান্তিকে লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ঋণাত্মক ৫৬ পয়সা। তবে গত বছরের তুলনায় লোকসান কিছুটা কমানে পেরেছে তারা। গত বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ঋণাত্মক ৭১ পয়সা। লোকসান বেড়েছে
ফারইস্ট ফাইন্যান্স: বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৮২ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৭৯ পয়সা। এ হিসাবে লোকসান বেড়েছে ৩ টাকা ৩ পয়সা বা ৩৮৩.৫৪ শতাংশ।
ঢাকাটাইমস/২১মে/ইউএএ/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন