প্রথম রোজায় পণ্যের দামে নতুন লাফ
নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না-বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমন নিশ্চয়তা দিলেও রোজার প্রথম দিন তার নমুনা দেখা যায়নি বাজারে। রমজানে চাহিদা বাড়ে-সবজি থেকে শুরু করে এমন প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই আগের দিনের চেয়ে বেশি দেখা গেছে বাজার ঘুরে।
নতুন করে দাম বেড়েছে এমন পণ্যের মধ্যে আছে চিনি, বেগুন, লেবু, চিড়া, মুড়ি, শশা, টমেটো, মুরগির দাম। গরুর মাংস সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেয়া দামে বলতে গেলে পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। আর দাম নিয়ন্ত্রণে তদারকির কোনো নমুনাও দেখা যায়নি বাজারে গিয়ে।
রবিবার সকালে রাজধানীর রামপুরা বাজার ঘুরে দেখা যায় এক দিনের ব্যবধানে বেশ কিছু সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি।
আগের দিন বিক্রি হওয়া ৩০ টাকা কেজির পেঁপে আজ ৪০ টাকার কমে বেচতে রাজি হচ্ছেন না বিক্রেতারা। রোজায় বেগুনের পাশাপাশি পেঁপে দিয়েও বানানো হয় ইফতার সামগ্রী। এ কারণেই এর দাম বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
একইভাবে ৩০ টাকা কেজি দরের শশা এক দিনের মধ্যে ৫০ টাকা, ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরের লম্বা বেগুন সর্বনিম্ন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ৫০ টাকা কেজি দরের টমেটো ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ২০ টাকা হালির লেবু ৩০ টাকা হয়ে গেছে। গরমের দিন রোজায় শরবত করা যায় বলে ৪০ টাকা কেজির কাঁচা আমও এক দিনের ব্যবধানে হয়ে গেছে ৬০ টাকা।
রোজায় ইফতার সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় মুড়ির দামও এবার চড়া। রমজানের প্রথম দিনই ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।
বেড়েছে চিড়ার দামও। লাল চিড়া কেজি প্রতি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০/৭৫ টাকা এবং সাদা চিড়া ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০/৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারের বিক্রেতা বিল্লাল হোসেনের তথ্য মতে, বেড়েছে চিনির দামও। রোজার প্রথম দিন তিনি পণ্যটির দাম চেয়েছেন কেজি প্রতি ৭৫ টাকা। দুই দিন আগেও কেজিতে ৬৫ টাকা করে চেয়েছেন তিনি।
বিল্লাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বর্তমান বাজারে চিনি আর চালের দামটিই বেশি।’ চিনির দাম বাড়ল কেন-জানতে চাইলে তিনি জানান, আগে পাইকারি বাজার থেকে ৫০ কেজি ওজনের একটি বস্তা কেনা গেছে দুই হাজার ৮৫০ টাকায়। এখন এটা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৪৮০ টাকায়।
রোজার আগেই বেড়ে যাওয়া ছোলা, বুট আর বেসনের দাম অবশ্য নতুন করে বাড়েনি।
নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে না
রোজায় বিক্রির জন্য সিটি করপোরেশন প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৭৫ এবং খাসির মাংস ৭২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কিন্তু বাজারে এই দামে কোথাও মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়নি।
রামপুরা বাজারে এক দোকানে বিক্রেতা গরুর মাংস বিক্রি করছিলেন ৫০০ টাকা কেজি করে। দরদাম না করে একজন ক্রেতাকে সেই দামেই কিনে নিতে দেখা গেল। অন্য একজন দরদাম করে ২০ টাকা কমাতে পারলেন।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সরকারতে যতদিন চার্ট না দিব, ততদিন ৪৭৫ টাকায় বেচমু না। এই ৪৮০-৫০০ যার থেইকা যা রাখতে পারি তাই বেচমু। তারা (ডিএনসিসি) এখনো আমার কাছে কাছে আসে নাই, কত টাকায় বেচতে হইব কিছু জানি না। তয় হুনছি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নাকি মেয়র নিজে কইসে।’
নির্ধারণ না করা মুরগির দামও বেড়ে গেছে। রোজা শুরুর আগের দিনের ১৬০ টাকা কেজি দলের তুলনায় প্রথম রোজায় কেজিতে দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। রামপুরা বাজারে একটি দোকানে দাম শুনে পাঁচ জন ক্রেতাকে ফিরে যেতে দেখা গেল।
এক মুরগি বিক্রেতা দাম বাড়ার কারণ এভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ অনেক সময় দাম এমনিতেই বাইরা যায় কিছু করার থাকে না।’
(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এএকে/ডব্লিউবি)