এসএসসিতে জিপিএ-ফাইভ পাওয়া অদম্য লাবণ্য
দরিদ্র ঘরের মেয়ে লাবণ্য। মেধাবী মেয়েটি গরিব ঘরের সন্তান হয়েও আইনজীবী হতে স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তার এই স্বপ্ন পূরণ তার গরিব বাবা-মার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই লাবণ্য অকপটে বললেন, আমাদের দেশে অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি আছেন তারা কি একজন আমার শিক্ষাজীবনের দায়িত্ব নিতে পারেন না? এমন কেউ এগিয়ে এলে হয়তো আমি আমার বাস্তবতার জেগে থাকা স্বপ্নটি পূরণ করতে পারতাম।
লাবণ্যের পুরো নাম লিমানা খন্দকার। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুরের বোর্ডে নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে মানবিক বিভাগ হতে।
নীলফামারী শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টিনের ছাপড়ায় বসবাস একটি লাবণ্যদের। তবু অদম্য মেধা ও ইচ্ছা শক্তিকে পুঁজি করে দারিদ্রতার কড়াল গ্রাসে নিজেকে ভাসিয়ে না দিয়ে অন্যের কাছ থেকে বই সংগ্রহ আর বাড়িতে বসে ছোট ছোট শিশুদের কাপড় জামা সেলাই করে খরচ জুগিয়ে লেখাপড়া চালিয়েছেন লাবণ্য। ছোট বোন লুবনা এবার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। সেও মেধাবী। এই দুই বোন যেন গরিবের ঘরে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানায়, ছোটবেলা থেকেই লাবণ্য অতি মেধাবী। পিএসসি পরীক্ষাও সে জিপিএ-৫ অর্জন করেছিল। সকলের দোয়া ও সহযোগিতা পেলে একদিন নিশ্চয়ই তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। ঘুচাতে পারবে দারিদ্র্য। মুছিয়ে দিতে পারবে বাবা-মায়ের চোখের পানি।
লাবণ্য জানান, কম বেতনে বাবার কাজটিও কষ্টের। মার সঙ্গে ঘরে বসে সেলাইয়ের কাজ করি। তিন বেলা খাবার জুটলেও লেখাপড়ার খরচ বাবা-মায়ের পক্ষে কঠিন ব্যাপার।
লাবণ্যের বাবা ও মা জানান, তাদের মেয়ের এই সাফল্য দেখে এলাকাবাসী ও মেয়ের শিক্ষকেরা অনেক খুশি হয়েছে। সবার দোয়া থাকলে মেয়েটি আমার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে। স্কুলে শিক্ষকরা যা শিক্ষা দিয়েছে, তাই দিয়ে মেয়েটি ভাল ফলাফল করেছে। তাকে প্রাইভেট দিতে পারিনি। যদি কোন স্ব-হৃদয় ব্যক্তি আমার মেয়ের লেখাপড়ার ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে মেয়েটি তার স্বপ্ন পূরণে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
(ঢাকাটাইমস/৩১মে/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন