ঈদ বাজারে মেয়েদের ‘গাউন’ আর ‘সারা-রা’
ঈদ আসতে এখনো দেরি। কিন্তু মার্কেটে গেলে বোঝা যায়, ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। বরাবরের মত কেনাকাটায় এবারো মূল ভূমিকায় বাংলার নারী সমাজ। আর এবারো বিশেষ কিছু পোশাক নারী ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আছে। এরকমই দুটি বিশেষ প্রকৃতির পোশাক ‘গাউন’ আর ‘সারা-রা’ এবার মাত করেছে ঢাকার ঈদের বাজার।
ঈদকে কেন্দ্র করে তরুণীদের বাহারি নামের সব পোশাক এসেছে বাজারে। ফ্লোরটাচ গাউন বা ব্রাইডাল গাউন, সারারা, ক্যাপ গাউন, নরমাল পার্টি গাউন, লং গাউন বুটিকস্, লং কামিজসহ বিভিন্ন নামের চোখধাঁধানো পোশাকের প্রতি নারী ক্রেতাদের মনোযোগ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
তবে ঘুরেফিরে দুটি শব্দ বাজারে শোনা যাচ্ছে বেশি - গাউন আর সারারা। রাজধানীর অন্যতম প্রধান অভিজাত বিপণি বিতান যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, সোবহানবাগের প্রিন্স প্লাজা, গুলশান পিংক সিটি শপিং মল, ইস্টার্ন মল্লিকা, ইস্টার্ন প্লাজাসহ কয়েকটি শপিং মলের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, তরুণীদের আকর্ষণ এক ধরনের লম্বা গাউনকে ঘিরে। একে বলা হচ্ছে ‘বোম্বে গাউন’ নাম; কেউ আবার বলছেন ফ্লোর টাচ গাউন, আবার কেউ বলছেন ‘ব্রাইডাল গাউন’ নামে।
‘গাউন’ মূলত পাশ্চাত্য ঢঙের। তবে ডিজাইনে কিছুটা পরিবর্তন ও পোশাকের সামনের দিকে জমকালো কারুকাজ দিয়ে একে উপমহাদেশের উপযোগী করা হয়েছে। বলিউডি গাউনের বড় বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- লম্বা ঝুল। অতিরিক্ত ঝুলের কারণে পোশাকের নিচের দিকে অনেকখানি মাটিতে ছড়িয়ে থাকে। এ কারণেই এর আরেক নাম ‘ফ্লোর টাচ গাউন’। এ গাউন বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
বোম্বে গাউনের মূল ডিজাইন হচ্ছে, এটি হাতাকাটা বা স্লিভলেস। গলা থেকে কিছুটা নিচে জমকালো জরি ও স্টোনের কাজ। গাউনের নিচের দিকে নানা রঙের শিফন বা জর্জেট কাপড়ের কাটপিস জুড়ে দেয়া। বিভিন্ন দোকান ঘুরে কিছু গাউনের নিচে সেলাই করা আবার কিছু গাউনের নিচে পাড় লাগানো ফ্যাশন দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানান, লম্বা ঝুলের এ গাউন সাধারণত বিয়ে ও পার্টি আমেজে পড়া হয়ে থাকে। অনেকেই ঈদের পরে বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিধান করার জন্যও এ ধরনের দামি পোশাক কিনছেন।
গাউন ছাড়া আরেক ধরনের পোশাক এবার ঈদে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ‘সারা-রা’ নামের বলিউডি এ পোশাকের দিকে ভালোই ঝুঁকছেন বাংলাদেশের নারী সমাজ। লম্বা ঝুলের কামিজ, তার ওপরে কোটি। কোটিতে নানা ধরনের সুতা, চুমকি ও জরির জমকালো কারুকাজ। নাম তার ‘সারা-রা’। সারা-রা পোশাকের পেছনে ছুটছেন শহুরে তরুণীরা। ভারতীয় ডিজাইনের এ পোশাক এখন রাজধানীর অভিজাত শপিংমলগুলোতে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। আর দাম জানতে চান? ডিজাইন, সুতা ও কারুকাজের মান ভেদে জমকালো ও নজরকাড়া পোশাকটি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিন্ম ৬ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায়। পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর অভিজাত শপিংমলগুলোতে।
শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলের দোকানিরা জানালেন, গতবারের ঈদে জনপ্রিয় ছিল পাখি ১, ২, ৩, জিনাম ড্রেস, পাংকুড়ি, ইশকিয়া ঘেরসহ অন্য নামের পোশাকগুলো। এবার আর এই নামের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না। এবার বিভিন্ন নামের চোখধাঁধানো ‘গাউন’ আর ‘সারা-রা’ ড্রেস ক্রেতাদের বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করছে।
বাড্ডা থেকে বসুন্ধরা শপিং মলে পোশাক কিনতে এসেছেন তাসনুভা। তার পছন্দ ‘ফ্লোরটাচ গাউন’। বাড্ডা থেকে এত দূরে কেনো এসেছেন- জানতে চাইলে তাসনুভা বলেন, ‘এখানে মনের মতো ডিজাইন পাওয়া যায়। আর এখানে গুলশান বা বাড্ডার শপিং মলগুলোর চেয়ে দাম তুলনামূলক কমই রাখা হয়।’
বসুন্ধরা সিটির লেভেল টু-এর মিতুয়া ফ্যাশন শো-রুমের সেলসম্যান নোমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ ছোট বড় সবারই পছন্দ থাকলেও বাচ্চারা ক্রেজ পোশাকগুলো ছাড়া অন্য কিছু কিনতেই চায় না।’
নতুন নতুন ডিজাইনের জমকালো কাজ নিয়ে এসব পোশাক আসছে দেশের বাইরে থেকে। বিশেষত ভারতের বোম্বে ও দিল্লী থেকে। ভারতীয় এসব পোশাকের প্রতি শিশু ও তরুণীদের আকর্ষণ বেশি।
(ঢাকাটাইমস/৪জুন/এনআই/এসএএফ/)
মন্তব্য করুন