ধর্ষণসহ পৃথক তিন মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৯:৪৮

সাতক্ষীরায় পাচার ও ধর্ষণের দায়ে পৃথক তিনটি মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার মামলা তিনটির রায় ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের আব্দুল করিম মল্লিকের কালিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে একটি হোটেল ছিল। তিনি ও তার স্ত্রী হোটেলটি চালাতেন। একদিন একই উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের জগদীশকাটি গ্রামের গোলাম রসুল ওই হোটেলে কাজ নিতে যায়। হোটেল মালিক তাকে কাজ দেন। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০০৫ সালের ২৯ জুলাই গোলাম রসুল পাচারের উদ্দেশ্যে হোটেল মালিকের ছেলে শহীদুল ইসলামকে (৪)নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ৩০ জুলাই ফরিদপুরে স্থানীয় লোকজন ওই শিশুসহ গোলাম রসুলকে আটক করে পুলিশে দেয়। এ ঘটনায় আব্দুল করিম মল্লিক কালিগঞ্জ থানায় অপহরণের দায়ে গোলাম রসুলের বিরুদ্ধে মামলা করে।

এ মামলায় নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

তবে, মামলার রায় ঘোষণার সময় আসামি অনুপস্থিত ছিল।

এদিকে, এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের দায়ে নুর ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি তালা উপজেলার আটরই গ্রামের মোকাম মোড়লের ছেলে নুর ইসলাম তার প্রতিবেশী এক প্রতিবন্ধী নারীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে বিয়ে আশ্বাস দিয়ে পালিয়ে যায় নুর ইসলাম। এ ঘটনায় ওই প্রতিবন্ধী নারীর ভাই নুর ইসলামসহ তার সহযোগী খায়রুল মোড়ল ও নাজমা বেগমের নামে মামলা করেন।

এ মামলায় সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। তবে, অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে, পৃথক আরও একটি ধর্ষণ মামলায় হাফিজুর রহমান নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা গ্রামের কাজী গিয়াস উদ্দিনের ছেলে হাফিজুর রহমান তার প্রতিবেশী শেখ মারুফ আহমেদের বাড়িতে কর্মরত কাজের মেয়েকে কু-প্রস্তাব দিত। ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ বিষয়টি হাফিজুর রহমানের বাবা-মাকে জানালে তারা ওই মেয়ের সাথে ছেলেকে বিয়ের আশ্বাস দেন। এই প্রশ্রয় পেয়ে হাফিজুর রহমান ওই মেয়েকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতে থাকে। এতে মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে হাফিজুর রহমান তাকে বিয়ে না করে পালিয়ে যায়। এঘটনায় ২০০৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মেয়েটি বাদী হয়ে হাফিজুর রহমানের নামে ধর্ষণ মামলা করে।

এ মামলায় পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।

সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনটি মামলার আসামিই পলাতক রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৪জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :