থানা চত্বরেই যৌতুকের টাকা রফা

মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
| আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০১৮, ২০:০৮ | প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট ২০১৮, ২০:০১

বেশ গোলমেলে ব্যাপার। একজনের সঙ্গে প্রেম, কিন্তু বিয়ের বাগদান অন্য জনের সঙ্গে। যৌতুক নিয়ে হচ্ছিল এই বিয়ে। জানতে পেরে প্রেমিকা দিলেন থানায় অভিযোগ, ধরে আনল পুলিশ। আর এরপর ভেঙে যায় বিয়ে। কিন্তু গোল বাধে যৌতুক হিসেবে নেয়া টাকা। পরে প্রেমিকার পরিবারের সঙ্গেই বিয়ের কথা হয়, কিন্তু সেখানেও ‘চুক্তি’ হয় যৌতুকের।

ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানায়। সেখানে বসেই যৌতুকের টাকা নির্ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে উপপরিদর্শক তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

গত ১০ আগস্ট উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের পূর্ব সুরাইল সাহাপাড়ার জয়ন্ত কুমার রায় পার্বতীপুর উপজেলার ভবের বাজার এলাকার মনোরঞ্জন রায়ের কন্যার সঙ্গে বাগদান করেন। ১৫ লাখ টাকা যৌতুকে এই বিষয়ে হবে বলে ‘চুক্তি’ হয় আর ১০ লাখ টাকা নগদ নেন জয়ন্ত।

কিন্তু জয়ন্ত আট বছর ধরে প্রেম করছিলেন তার ইউনিয়নের ঢাকইল ভরসাপাড়া গ্রামের ঊষা রানী সোনালীর সঙ্গে। তিনি গত ২৫ আগস্ট চিরিরবন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। আর দুই দিন পর জয়ন্তকে তার বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।

এই খবর জেনে আশীর্বাদ করা মেয়ের বাবা মনোরঞ্জন রায় থানায় গিয়ে মেয়েকে জয়ন্তর সঙ্গে বিয়ে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তখন তিনি তার দেয়া ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণের চেইন ফেরত চেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার শরণাপন্ন হন।

দিনভর দফায় দফায় বৈঠক হলেও সারাদিনে কোনো সুরাহা করতে পারেনি স্থানীয় গণ্যমান্যরা। অবশেষে এস আই তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে আবার বৈঠক শুরু হয়। এ সময় জয়ন্ত যৌতুক হিসেবে মনোরঞ্জনের কাছ থেকে নেবেন বলে ঠিক হয়েছে, সেই পরিমাণ টাকা দিলে সোনালীর সঙ্গেই জয়ন্তর বিয়ে হবে।

কিন্তু সোনালীর বাবা এত টাকা যৌতুক দিতে পারবেন না জানিয়ে ‘ক্ষমা’ চান। পরে পুলিশ কর্মকর্তা তাজুল কথা বলেন জয়ন্তর সঙ্গে এবং সেখানে যৌতুকের অংক ঠিক হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। এরপর সোনালীর বাবা নগদ ৪০ হাজার টাকা জয়ন্ত কুমারকে দিলে রাতেই থানার পাশে একটি কালী মন্দিরে নিয়ে জয়ন্ত-সোনালীর বিয়ে দেয়া হয়।

যৌতুক দেয়া এবং নেয়া দুটোই অপরাধ হলেও যৌতুক নির্ধারণের মতো বেআইনি কাজ কীভাবে করলেন- জানতে চাইলে এসআই তাজুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার বলার কিছুই নেই। কারণ আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি কাজ করছি।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারেসুল ইসলাম জানান, ‘আমি এসআই তাজুলকে আইনিভাবে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছে।’

ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :