জীবন্ত মানুষকে কবরে নামিয়ে প্রতারণা, আটক ৩

কবর খোঁড়া হয়েছে। তবে মরদেহ দাফনের জন্য নয়। মুখ বেঁধে কবরে শুইয়ে দেয়া হয়েছে জীবন্ত একজন মানুষকে। দাফনের আনুষ্ঠানিকতা মেনে রীতিমতো মাটি চাপা দেয়াও হয়েছে। এইবার দেখানো হবে যাদু, দেখাবেন এক যাদুকর। উৎসুক জনতার চোখ তখন কবরের দিকে। হঠাৎ পাল্টে গেল জাদুকরের সুর।

উপস্থিত উৎসুক জনতার উদ্দেশে জাদুকর বললেন, ‘যা আছে আনুন, নইলে বাঁচানো যাবে না ভেতরের মানুষকে। মানুষটি মরে গেলে এই এলাকার কেউই বাঁচবে না।’

যাদুকরের মুখে ভয়ঙ্কর এমন কথা শুনে আশে পাশের মানুষরা হন্তদন্ত হয়ে আনা শুরু করলেন যার যা আছে। কেউ নগদ টাকা, কেউ ধান, কেউ কাপড় এনে ওই কবরের সামনে রাখা শুরু করলেন। ঠিক এমন সময় পাশ দিয়ে ফোর্সসহ যাচ্ছিলেন বাগাতিপাড়া থানার এসআই খাইরুল ইসলাম। মানুষের ভিড় ঠেলে কাছে গিয়ে দেখেন মৃত্যুর অভিনয় করিয়ে কৌশলে করা হচ্ছে প্রতারণা।

মঙ্গলবার বিকালে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের রহিমানপুরে বাদশা নামে এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে অদ্ভুত এ প্রতারণার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কথিত জাদুকর পরিচয়ের তিন প্রতারককে আটক করে পুলিশ।

তারা হলেন- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের নুরনগর গ্রামের মনোয়ার হোসেন, একই গ্রামের পলাশ ও ঝিনাগ্রামের সেলিম হোসেন।

আটক তিনজনই বাঘা থানার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে বাঘা থানায় পলাশের বিরুদ্ধে পাঁচটি ও মনোয়ারের বিরুদ্ধে দুটি মাদক মামলা রয়েছে।

বাগাতিপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকালে রহিমানপুর থেকে ফেরার সময় বাদশা নামে এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে জনতার ভিড় দেখতে পাই। কাছে গিয়ে দেখি, সেলিমকে কবরে শুইয়ে রেখে মাটি চাপা দিয়েছে মনোয়ার ও পলাশ। কথামতো সাহায্য না করলে সেলিমের মৃত্যু হবে এবং সেলিমের মৃত্যু এলাকবাসীর জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে। তারা উপস্থিত জনতাকে জিম্মি করে টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র হাতিয়ে নিচ্ছিল।’

বাগাতিপাড়া থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, আটক তিনজনই পাশের বাঘা থানার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলার আসামি।’