ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নতুন দুই সেতু ঘিরে স্বস্তি

মাসুদ আলম, কুমিল্লা
  প্রকাশিত : ২৯ মে ২০১৯, ১০:০১
অ- অ+

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গোমতী নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় সেতুর উদ্বোধন হয়েছে গত শনিবার। একই সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় সেতুও যান চলাচলে উন্মুক্ত হয়। সেই সঙ্গে সড়কপথে যানবাহনের চালক ও যাত্রীর মধ্যে স্বস্তির দেখা দিয়েছে। তবে উদ্বোধনের পর সংস্কারের জন্য গোমতী ও মেঘনা নদীর উপর পুরাতন সেতু দুটিতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গোমতী ও মেঘনা সেতুর দুই পাশে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। টোলপ্লাজায় টোল আদায়ের পর আগের মতো সেতুতে উঠার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। চারলেনের গাড়িগুলো দুইলেনের সেতুতে উঠতে গিয়ে জটও সৃষ্টি হয় না। চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকার দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি মিলছে।

স্থানীয় কয়েকজন চালক অভিযোগ করে বলেন, দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু চালু হওয়ায় এখন আগের মতো যানজটের শঙ্কা নেই। তবে টোলপ্লাজায় টোল আদায়ে ধীরগতি, ওজন স্কেলের নামে যানবাহন আটকে হয়রানির কারণে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া রাতের বেলায় টোলপ্লাজায় প্রবেশ করার সময় ট্রাফিক পুলিশ ও ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা যানবাহন আটক রেখে চাঁদা আদায়ে যানজটের সৃষ্টি করে।

খালেদ বিন নজরুল নামে এক যাত্রী জানান, বহু কাক্সিক্ষত দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের অবসান ঘটেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হবে না। রোগী, নারী, শিশু, বৃদ্ধা ও সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়বে না। ঈদ-পূজাসহ সবধরনের উসবে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে যাত্রা করতে পারবে।

কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব মো. তাজুল ইসলাম ও বাস মালিক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোতাহের হোসেন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনের হলেও যানবাহনের চাপ বাড়লে দুইলেনের মেঘনা ও গোমতী সেতুর দুইপাশে যানজট সৃষ্টি হতো। এতে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হতো। দুর্ভোগে পড়তেন চালক ও যাত্রীরা।

শনিবার মেঘনা ও গোমতী নদীর উপর দ্বিতীয় সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে যানজটের অবসান ঘটেছে। এখন থেকে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন।

দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ান শেখ শরিফুজ্জামান বলেন, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে এই প্রথম স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যমে মেঘনা ও গোমতী নদীর উপর দ্বিতীয় সেতু নির্মিত হয়েছে। তারমধ্যে গোমতী সেতু লম্বায়ও বড়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে মহাসড়কের ২৫তম কিলোমিটারে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি স্প্যানের ৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্য, ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থের মেঘনা নদীর ওপর মেঘনা সেতু এবং ৩৭তম কিলোমিটারে সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭টি স্প্যানে এক হাজার ৪১০ মিটার দৈর্ঘ্য, ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থের গোমতী নদীর ওপর গোমতী দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সেতু দুইটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৪১ মাসে কাজ সম্পন্ন হয়।

সেতু দুটির প্রকল্প পরিচালক মো. নাবিরুজ্জামান বলেন, গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার মেঘনা ও গোমতী নদীর উপর দ্বিতীয় সেতুর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর সেতু দুইটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। পরে সংস্কারের জন্য পুরাতন মেঘনা ও গোমতী সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সংস্কার কাজ শেষ হতে আড়াই থেকে তিন মাস লেগে যাবে। নতুন নির্মিত সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচলে জট সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা নেই। তারপরও যদি ঈদকে ঘিরে গাড়ির চাপ দেখা যায়, সাথে সাথে পুরাতন সেতু দুইটাও খুলে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

ঢাকাটাইমস/২৯মে/প্রতিনিধি/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে দুই ককটেল বিস্ফোরণ
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১৬৯০ জন
এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধাদের স্মরণে ‘বিআরপি’র মশাল মিছিল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা