ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন ঢাবির গৌরবময় ইতিহাস: ভিসি
যেকোনো অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাস বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল সেটা ভুল বোঝাবুঝিতে হয়েছে বলে মনে করেন উপাচার্য। তবে সেই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেনাবাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানো উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালো দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।টিএসসিতে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য।
২০০৭ সালের ২০-২৩ আগস্ট সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের গ্রেপ্তার এবং বর্বরোচিত নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই ঘটনার স্মরণে প্রতি বছর ২৩ আগস্ট দিনটি ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা অনেকে বলি ২০০৭ সালের ২৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আক্রমণ হয়েছিল সেটা সেনাবাহিনীর আক্রমণ। কথাটি ভুলক্রমে এভাবে উপস্থাপিত হয়। এটা সেনাবাহিনীর কোনো আক্রমণ নয়।এটা সেনাবাহিনী– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যকার কোনো বিতর্কও নয়।এটি ছিল অন্য একটি বিষয়।’
‘সেনাবাহিনী দেশের গৌরবের একটি অংশ। দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বের প্রতীক। এটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। সুতরাং আমরা যেন বিষয়টিকে গুলিয়ে না ফেলি যে এটি সেনাবাহিনী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোনো আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ।’
আখতারুজ্জামান বলেন, ‘২০০৭ সালে যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিল সেটি গণতান্ত্রিক সরকার নয় এবং তাদের ব্যর্থতা ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ আগস্ট এই অমানবিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় সরকারের যদি ভালো ব্যবস্থাপনা ও ভালো দৃষ্টিভঙ্গি থাকত তাহলে এই অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটত না।’
ভিসি বলেন, ‘সেসময় নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছিল তা ছিল ন্যায়সঙ্গত।
তখনকার সরকার ও প্রশাসন যদি সেই দাবি সঠিকভাবে অনুধাবন করত এবং সমাধানের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিত তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ কালো দিবস পালন করতে হতো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সবসময় যেকোনো অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের
বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করে থাকেন এবং এসব ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাসের অংশ।’
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, ঢাবি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, ডাকসু’র ভিপি মো. নুরুল হক, নির্যাতিত ছাত্র জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সরোয়ার মোর্শেদ, কারিগরি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন এবং চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া।
(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/এমআই/জেবি)