ছাত্রলীগে ১২ জনের মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:৪০| আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:১০
অ- অ+
প্রতীকী ছবি

ছাত্রলীগের ওপর প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়েছেন যেসব কারণে তার একটি মাদক। আর চলতি বছর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার পর থেকেই অন্তত ১২ জনের নাম উল্লেখ করে তালিকাও দিয়েছে পদবঞ্চিত বিক্ষুব্ধরা। কিন্তু এ নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

গত শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে ছাত্রলীগ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন শেখ হাসিনা। তিনি ছাত্র সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে দেখাও দেননি। পরে তাদের গণভবনে থেকে বের হয়ে যেতে বলেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা এও বলেছেন, ‘আমি ছাত্রলীগের এমন নেতা চাই না... যাদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে।’

গত বছরের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলনের প্রায় দেড় মাস পরে ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরও ১০ মাস পর গত মে মাসে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর অছাত্র, বিবাহিত, ব্যবসায়ী, মাদক সম্পৃক্তরা স্থান পেয়েছেন অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখায় এক পক্ষ।

২০১৮ সালের মে মাস থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বারবার মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। ছাত্রলীগকেও বলেছেন মাদকের বিরুদ্ধে লড়তে।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কয়েকদিন পর কমিটিতে পদপ্রাপ্ত মাদকসম্পৃক্ততাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৯৯ জনের নাম প্রকাশ করে পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের একটা অংশ। আর অভিযুক্তদের মধ্যে মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকের মামলার আসামি হিসেবে ১২ জনের নাম উঠে আসে।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তাদের মধ্যে সহসভাপতি পদে ছয়জন, সম্পাদক পদে একজন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন, উপ সম্পাদক পদে দুজন এবং সহসম্পাদক পদের একজন রয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ কেন্দ্রীয় কমিটি তখন আমলে নেয়নি।

যদিও কেন্দ্রীয় কমিটিবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে গত ২৯ মে ছাত্রলীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাদকাসক্ত, বিবাহিত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৯ জনকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের পদ শূন্য করার ঘোষণা হয়। যদিও তিন মাস পেরিয়ে গেলেও যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সেই নামগুলো জানানো হয়নি। আর এ কারণে জানা যায়নি, যাদের বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে, তাদের বিরুদ্ধে আদৌ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না।

ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের অভিযোগ, সংগঠনের কার্যালয়েই মাদক সেবন করা হয়। আর এর সাক্ষীও রয়েছে।

ছাত্রলীগের গত কমিটির উপ দপ্তর সম্পাদক নকিবুল ইসলাম সুমন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কয়েকজন নেতা মাদকাসক্ত। তারা পার্টি অফিসে বসে মাদক সেবন করে। তা না হলে পার্টি অফিসের মতো পবিত্র স্থানে মাদক আসে কোত্থেকে এবং নেত্রীর কাছে বিচার যায় কীভাবে? তদন্ত করে প্রধানমন্ত্রী এসবের প্রমাণ পেয়েছেন তাই তিনি তাদের উপর এত ক্ষুব্ধ।’

‘জননেত্রী যেখানে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন সেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে দেখি না কোনো প্রোগ্রামে এর বিরুদ্ধে কর্মীদের সতর্ক করতে।’

‘নেত্রী যখনই ছাত্রলীগের কোনো প্রোগ্রামে আসেন, তখন মাদকসহ যত অপকর্ম আছে সব ছেড়ে পড়ালেখার প্রতি বেশি মনযোগী হতে আমাদের নির্দেশ দিতেন। বলতেন, দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। এটাই ছিল ছাত্রলীগের ব্রত। এখন ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটিতে যারা আছে, তারা যদি মাদকাসক্ত হয় তাহলে নেত্রী মাদকমুক্ত যে স্বপ্ন দেখেন, সেটা কোনোভাবেই সম্ভব না। যে মাদকাসক্ত সে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলবে কীভাবে?’

তবে অভিযুক্ত এক নেতা অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা। আমি এর সঙ্গে জড়িত নই।’

এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে এই নেতা বলেন, ‘আসলে এ নিয়ে আইনি কোনো ঝামেলার মধ্যে জড়াতে চাইনি। তাই আর ওই দিকে আগাইনি।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে অভিযুক্তদের আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন ধরেননি।

আর ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বরাবরই গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেছেন। ছাত্রলীগের কারা মাদক সম্পৃক্ত- এই বিষয় এবং গণভবনে শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশ নিয়েও তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

ঢাকাটাইমস/৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে দুই ককটেল বিস্ফোরণ
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১৬৯০ জন
এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধাদের স্মরণে ‘বিআরপি’র মশাল মিছিল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা