এক্সপ্রেসওয়েতে বেপরোয়া পারাপার, যত্রতত্র থামছে পরিবহন

দ্রুত ও প্রতিবন্ধকতা ছাড়া যান চলাচলের জন্য নির্মিত দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক। সড়কটিতে যেখানে সেখানে গাড়ি থামানোয় নিষেধাজ্ঞা ও পথচারীদের সড়ক পারাপারের আন্ডারপাস ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম মানছেন না কেউ। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া পথচারীরা যে যার ইচ্ছে মতো সড়কপারাপার আর গণপরিবহনগুলো যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা নামা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার ও যত্রতত্র পার্কিংয়ে মহাসড়কটিতে দুর্ঘটনার ও প্রাণহানির শঙ্কা দেখা দিচ্ছে প্রতি মুহূর্তে।
সরজমিনে বুধবার দুপুরে মহাসড়কের নিমতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যে যেভাবে পারছে রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশে পারপার হচ্ছে। মাঝখানে ও পূর্বপাশে থাকা সড়ক বিভাজনের উপর দিয়ে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে কেউ কেউ প্রবেশ করছে মূলসড়কে। এরপর ডানে-বাঁয়ে তাকিয়ে কেউ দৌড়ে কেউ হেঁটে পারাপার করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এভাবেই রাস্তা পার হচ্ছেন বলে স্থানীয়রা জানায়।
এদিকে দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে নিমতলা পয়েন্টে একতা, জনগণের জন্য, গ্রেট বিক্রমপুর, সোনার বাংলা পরিবহনকে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করতে দেখা যায়। এ যেন আইন ভঙ্গের মহাৎসব।
শুধু নিমতলা নয়, একই চিত্র দেখা যায় মহাসড়কের কচিয়ামোড়া কলেজ গেইট, ষোলঘর স্ট্যান্ড, হাসাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে। সড়ক পারাপারের বিষয় কথা হলে পথচারীররা এসব পয়েন্টে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।
তন্ময় সাহা নামে এক স্কুলছাত্র জানায়, নিমতলা মোড় থেকে আন্ডারপাস করা হয়েছে দেড় কিলোমিটার দূরে। এতটা রাস্তা হেঁটে যাওয়া কষ্টকর। তাই গাড়ি দেখে রাস্তা পার হলাম।
ফল বিক্রেতা লিটন বলেন, নিমতলায় একটি ফুট ওভারব্রিজের প্রয়োজন। যে আন্ডারপাস করা হয়েছে তা বহুদূর। মানুষের যাওয়া আসা কষ্টকর।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা-মাওয়া সড়কের দায়িত্বে থাকা হাসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামন তালুকদার ঢাকা টাইমসকে জানান, নিরিবিচ্ছন্নভাবে গাড়ি চলাচলের জন্য এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কটিতে আইন ভঙ্গ করে কেউ যেন রাস্তা পারপার না করে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য পথচারীদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জনগণকে যত্রতত্র রাস্তা পারাপারে নিরুৎসাহিত করা হবে। মহাসড়কের নিরাপদে যান চলাচলের জন্য হাইওয়ে পুলিশ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজ করে থাকে। এ ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ফুট ওভারব্রিজের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, সড়ক পরিচালনার ক্ষেত্রে যে বিধিবিধান রয়েছে সেটি অনুসরণ করে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের উপযোগিতা থাকলে অবশ্যই বিষয়টি সরকারের নজরে আনা হবে এবং ফুটওভার ব্রিজ বাস্তবায়ন করা হবে।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ১১ হাজার ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কটি গত ১২ মার্চ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে যান চলাচল শুরু হয় সড়কটিতে। সড়কটির যাত্রাবাড়ী থেকে ৩৫ কিলোমিটার সড়ক পারি দিতে সময় লাগবে ২৭ মিনিট।
(ঢাকাটাইমস/২১মার্চ/এলএ)

মন্তব্য করুন