দেশের এক নম্বর মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২২ মে ২০২০, ১৭:২৬
অ- অ+

`নগদ' বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এক বছরের কিছু বেশি সময় পার হলো `নগদ'র। এরই মধ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল লেনেদেনের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহৃত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসেবে মানুষের আস্থা অর্জন করেছে।

মানুষের আস্থার অংশ হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের (রবি-এয়ারটেল) ৫ কোটি গ্রাহক একসঙ্গে ‘নগদ’-এ আর্থিক অন্তর্ভূক্তির ঘোষণা আসে, যা পুরো বিশ্বের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা হয়ে থাকবে। এর মধ্য দিয়ে গ্রাহক সংখ্যায় ‘নগদ’দেশের ১ নম্বর এমএফএস সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া একদিনে এত বেশি মানুষের অর্থনৈতিক অন্তর্ভূক্তির ঘোষণাও পৃথিবীতে এই প্রথম।

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসে ‘নগদ-এ আসলেই লাখপতি’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে অ্যাপ ও ইউএসএসডি দিয়ে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের (রবি-এয়ারটেল) গ্রাহকদের চার সংখ্যার একটি পিন সেট আপ করে ‘নগদ’-এ অন্তর্ভূক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। ‘নগদ’ এর এই ক্যাম্পেইন ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য রবি ও এয়ারটেল গ্রাহকেরা মাত্র দুই ধাপেই পিন সেট করে খুলে ফেলছেন ‘নগদ’অ্যাকাউন্ট।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র বলেন, মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তৈরির একটি জায়গা নির্মাণ করেছে এই চুক্তিটি। লেনদেনের ক্ষেত্রে রবি ও এয়ারটেল গ্রাহকদের জন্য এক নতুন ডিজিটাল সেবার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। এই চুক্তির ফলে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের (রবি-এয়ারটেল) গ্রাহকেরা বাংলাদেশে সবচেয়ে কম চার্জে লেনদেন এবং দেশের যেকোনো মোবাইল নাম্বারে টাকা পাঠাতে পারবেন। সঙ্গে বিল, মার্চেন্ট ও ই-কমার্স পেমেন্ট এবং অন্যান্য সুবিধা তো থাকছেই।

‘নগদ’এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘নগদ’ যেমন বিশ্বাস করে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, তেমনি বিশ্বাস করে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য আর সম্মতির স্বাধীনতাও। ‘নগদ’ কেবল সেসব গ্রাহকের অ্যাকাউন্টই খুলছে, যারা ‘নগদ’ কে তারঁ তথ্য রবি আজিয়াটা লিমিটেডের (রবি-এয়ারটেল) কাছ থেকে সংগ্রহ করার সম্মতি দিয়েছেন। পরে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘নগদ’ সেটি নির্বাচন কমিশন কিংবা আরেকটি সরকারি পোর্টাল ‘পরিচয় ডট কমের’ মাধ্যমে যাচাই করে নিচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহককে তো জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দিতেই হতো, এখন সেটা আর করা লাগছে না। ‘নগদ’ রবি আজিয়াটা লিমিটেডের (রবি-এয়ারটেল) সহযোগিতায় সেটি নিজ উদ্যোগে যাচাই করে নিচ্ছে। আর পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হচ্ছে মাত্র ১০ সেকেন্ডে।

বাংলাদেশে একটি সময় ছিল যখন একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট খুলতে সাত থেকে ১০ দিনের মতো সময় লাগত। পাশাপাশি ভুয়া অ্যাকাউন্টও খোলা যেত খুব সহজে। রাষ্ট্রীয় সেবা ‘নগদ’ বাংলাদেশে প্রথম একদিনে মোবাইলে ‘নগদ’অ্যাকাউন্ট খোলার প্রযুক্তি নিয়ে আসে এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাইয়ের ব্যবস্থা করে। এর ফলে ভুয়া পরিচয় দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের আরেকটি সেবা ‘পরিচয় ডট কম’-এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১ মিনিটে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি, যা এখন অনেকের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশের মানুষকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার এই সুযোগ করে দেওয়াতে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ভূমিকাও ছিল অনিস্বীকার্য। কী উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এগিয়ে আসলেন, জানতে চাইলে রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ৫ কোটি রবি ও এয়ারটেল গ্রাহক ‘নগদ’-এ আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে গ্রাহকেরা ডিজিটাল লেনদেন খুব সহজেই করতে পারবেন এবং জীবনধারার মান উন্নত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। অ্যাপ বা ইউএসএসডি-এর মাধ্যমে গ্রাহক নিবন্ধন প্রক্রিয়াতেই প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে সম্মতি নিয়ে খোলা হচ্ছে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি'র এ বিষয়ে যথাযথ অনুমোদন রয়েছে এবং গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে রবি আজিয়াটা লিমিটেড সবসময়ই বদ্ধপরিকর। একই সঙ্গে এই চুক্তির মাধ্যমে শুধু রবি-এয়ারটেল গ্রাহকেরাই পেলেন এই অনন্য সুবিধা, মূহূর্তের মধ্যেই কোনো ঝামেলা ছাড়া সময়ক্ষেপণ না করেই তাঁরা পাচ্ছেন একটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট।

মানুষের ব্যক্তিগত উন্নয়নে এই চুক্তি যেমন ভূমিকা রাখছে, তেমনি এই চুক্তিকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের একটি মাইলফলক। এ ব্যাপারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা অন্যতম এক সহযোদ্ধা। রবি’র ৫ কোটি গ্রাহক ‘নগদ’-এর মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে আসছে, এটা ডিজিটাল বিল্পবের ক্ষেত্রে অনন্য নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার-এর প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখছে, এই চুক্তিটাও সেই স্বপ্ন পূরণের পথে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

রবি ও ‘নগদ’-এর চুক্তির ফলে গ্রাহকের নগদ অ্যাকাউন্ট খোলা কেবলমাত্র ১০ সেকেন্ডের একটি পরিশ্রম। সেই অ্যাকাউন্ট গ্রাহক খুলবেন কিনা এই স্বাধীনটি সম্পূর্ণই গ্রাহকের হাতে। এই উদ্যোগ নিশ্চিৎভাবে দেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে আনতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ‘নগদ’-রবি’র এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে সূচনা হলো ডিজিটাল বিপ্লবের এক নতুন অধ্যায়।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে দুই ককটেল বিস্ফোরণ
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১৬৯০ জন
এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধাদের স্মরণে ‘বিআরপি’র মশাল মিছিল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা