মানব শরী‌রে ক‌রোনা সংক্রমণের ছ‌বি প্রকাশ কর‌লেন গ‌বেষকরা

স্বাস্থ‌্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৫০ | প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:২৬

চীনের উহান শহরে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রমণ দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘২০১৯-এনসিওভি’ নামকরণ করে। ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে করোনাভাইরাসকে দেখতে রাজকীয় মুকুটের মতো দেখায়। এর অঙ্গসংস্থান ভাইরাল স্পাইক পেপলোমিয়ার দ্বারা তৈরি হয়েছে যেগুলো মূলত ভাইরাসের পৃষ্ঠে অবস্থিত প্রোটিন।

সম্প্রতি করোনাভাইরাস কীভাবে শ্বাসযন্ত্রের কোষগুলোকে আক্রমণ করছে, কীভাবে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, ছবির মাধ্যমে তা বুঝিয়ে প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা। সে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ফুসফুসের ভিতরের প্রতিটি কোষে একাধিক সংখ্যক ভাইরাস থাবা বসাচ্ছে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে।

নর্থ ক্যারোলিনা চিনড্রেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্যামিলি এর গবেষণাগারে এই সার্স-কোভ ২ জীবাণুর সংক্রমণের ছবি তুলেছেন এবং তা গ্রাফিক্যাল ব্যাখ্যা-সহ প্রকাশ করেছেন। এই প্রথম এত খুঁটিয়ে জানা গেল ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটানোর পথটি।

জানা গেছে, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপে ৯৬ ঘণ্টা ধরে লাগাতার স্টাডি করায় ধরা হয়েছে শ্বাসযন্ত্রে ভাইরাসের সংক্রমণের ছবি। প্রথমে শ্বাসযন্ত্রের কোষ থেকে কলা, কলা থেকে গোটা যন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ার ছবি দেখা গিয়েছে সেখানে।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এই গবেষণা-পরবর্তী ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ছবিগুলো বোঝার সুবিধার জন্য বিভিন্ন রং করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্পষ্ট দেখানো হয়েছে, ফুসফুসের বাইরের দিকে এপিথেলিয়াল কোষের গায়ে লোমশ অংশে মিউকাসের মতো পদার্থ তৈরি করছে ভাইরাস। সেখানেই বাড়ছে সংখ্যা। শুধু তাই নয়, সেগুলি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি আসা অন্য ব্যক্তির টিস্যুগুলোতে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

এই ছবি তৈরির পেছনে গবেষকদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের গঠন এবং ঘনত্ব নির্ণয় করা। তা করতে সফল হয়েছেন তারা। এই ছবি দেখার পরে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রথম এত স্পষ্ট ছবি মিলল ভাইরাসের সংক্রমণের পদ্ধতির। এতে প্রতিরোধী গবেষণা করতে আরও সুবিধা হবে।

গবেষকরা জানিয়েছেন এই ছবি তৈরির গবেষণাটি মানুষের শ্বাসযন্ত্রের অভ্যন্তরে প্রতিটি কোষে করোনার যে জীবাণু তৈরি হচ্ছে ও বাড়ছে সংখ্যায়, তা দেখতে ও বুঝতে খুবই জরুরি ভূমিকা পালন করবে। ছবিতে একথাও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, যে একসঙ্গে বেশি সংখ্যক জীবাণু আক্রমণ করলে, তা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও যথেষ্ট বেশি।

ফলে যতদিন না ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, ততদিন এ ভাইরাস যাতে শরীরে ঢুকতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই একমাত্র উপায়। কারণ একবার শরীরে ঢুকে শ্বাসযন্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে গেলে, তাকে রোখা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। তাই সর্বদা মাস্কের ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই শ্রেয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের (সার্স-কোভ-২) সংক্রমণ, মিউটেশনের হার, জিনগত বৈশিষ্ট্য, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন এবং জেনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করে দেশে পাঁচ ধরনের স্বতন্ত্র করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায়নি।

ভাইরাসটি অনেক দ্রুত গতিতে এর রূপ পরিবর্তন করছে। স্পাইক প্রোটিনের জিনে ১০৩টি নিউক্লিওটাইড নিউটেশনের মধ্যে ৫৩টি নন সিনোনিমাস এমোনিয়া বেশি প্রতিস্থাপন ঘটে, যার মধ্যে পাঁচটি স্বতন্ত্র। যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায়নি। সংগৃহীত নমুনা সময়ের মধ্যে ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে চারটি নিউটেশনের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা যায়।

(ঢাকাটাইমস/১৪ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

গবেষণা, শিক্ষা নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নামে ‘ভুয়া’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, সতর্কতা মন্ত্রণালয়ের

ক্যানসারের ঝুঁকি ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় তালের শাঁস! ডায়াবেটিসও রাখে নিয়ন্ত্রণে

পরিচিত যেসব খাবার ফুসফুসের সুস্থতার জন্য মহৌষধ

দেশে প্রয়োজনের তুলনায় নার্সের ঘাটতি ৩ লাখ ১২ হাজারের অধিক

‘বাত ব্যথার উপযুক্ত চিকিৎসা না করলে ঝুঁকিতে পড়বে জীবন’

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ৬ জন

কিডনি নষ্ট হচ্ছে গোপনেই! যেসব লক্ষণ দেখলে মোটেই অবহেলা নয়

দেশে ‘লং কোভিড’ নিয়ে বড় পর্যায়ের গবেষণার তাগিদ

দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানতে জরিপ চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :