রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ হুমকিতে, গোয়ালন্দে ৩০০ পরিবার গৃহহীন

এম.মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর ২০২০, ১৯:০০

গত ২৪ ঘন্টায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি চার সেন্টিমিটার বেড়ে তা বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে পদ্মায় তীব্র স্রোতের টানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফেরির প্রতি ট্রিপে আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় বেশি লাগছে। এতে দৌলতদিয়া প্রান্তে রবিবার দিনভর তীব্র যানজট চলছে। নদীর পাড়ে অপেক্ষায় রয়েছে দুই শতাধিক বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকার।

এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে প্রচন্ড ঘূর্ণায়মান স্রোতের টানে রাজবাড়ী গোজার বাজার এলাকার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধে ফের ধস হয়েছে। শনিবার ও রবিবার বৃষ্টি ও স্রোতের টানে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধের ডান তীর সংরক্ষণ বাঁধের গোদার বাজার এলাকার প্রায় ধ্বসে ২৫ ফুট এলাকা সিসি ব্লকসহ পদ্মা নদীর পেটে চলে গেছে। এ কারণে ভাঙনের জায়গা থেকে মাত্র একশ’ মিটার দূরত্বে থাকা রাজবাড়ী শহর রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ হুমকিতে পড়েছে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি, তীব্র স্রোত ও বাতাসের কারণে হঠাৎ করেই ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। রাজবাড়ী শহর রক্ষা বন্য নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন গোদার বাজার গোলাম মোস্তফার ইট ভাটা এলাকায় প্রায় ২০ ফুট সিসি ব্লকসহ ধসে গেছে।

আগেও এ জায়গায় পাশে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ১২০ মিটার এলাকা ধসে যায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ওই ভাঙন ঠেকাতে এক হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয়েছিল। এখন তার অল্পকিছু ভাটিতে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। তাই গত ৩ ও ৪ অক্টোবর পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ১০ হাজার জিও ব্যাগ ভাঙনস্থলে ডাম্পিং করা হচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতি দেখতে শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী ওহেদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক কাজী তোফায়েল আহম্মেদসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ভাঙন কবলিত এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

পদ্মায় আরো দুই-তিন দিন পানি বাড়তে পারে। ওই ভাঙনের জায়গা থেকে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধ এখন মাত্র অল্প দূরে থাকায় বাঁধটি হুমকির মধ্যে রয়েছে। তবে কর্মকর্তারা আশা করছেন ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

চতুর্থ দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে পদ্মা নদীবর্তী গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম, ছোট ভাকলা ও উজানচর ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা ফের প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি পদ্মায় বয়ে যাওয়া প্রবল স্রোত ও পানির ঘূর্ণিপাকে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের আজিজ মুন্সীর পাড়া ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া গ্রাম এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ওই এলাকার প্রায় তিন শত পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে, গাছপালা কেটে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, এসব এলাকার চরাঞ্চলের সদ্য বোনা প্রায় এক হাজার বিঘা মাসকলাই পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

(ঢাকাটাইমস/৪অক্টোবর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :