তিন বছর ধরে ভুগছেন রাণীনগর-কালীগঞ্জ রাস্তায় চলাচলকারীরা

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
| আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৬:০৯ | প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৫:৫২

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দীর্ঘ প্রায় তিন বছরেও শেষ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল এই রাস্তার কাজ। ফলে খানাখন্দে ভরপুর হয়ে গেছে রাস্তাটি।

এদিকে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় এই উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। কয়েকদিন আগে থেকে আবার রাস্তার কাজ শুরু করা হয়েছে। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ, এমন ভাবনা যেন সাধারণ মানুষকে ব্যাকুল করে তুলেছে।

দ্রুত এই রাস্তার কাজ শেষ করে লাখ লাখ মানুষকে ভোগান্তি থেকে রক্ষা করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।

রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকাজুড়ে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি নওগাঁ থেকে রাণীনগর এবং রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

রাস্তাটি প্রশস্ত এবং মজবুত পাকা করার জন্য ২০১৮ সালে টেন্ডার দেয়া হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ২৬টি কালভার্ট ও চারটি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পড়ে থাকায় রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কালভার্ট এবং সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি।

অধিকাংশ সেতু-কালভার্ট ভেঙে কাজ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পাশের রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। রাস্তার এমন বেহাল দশার অযুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় ভাড়া বাড়াচ্ছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পথচারীরা। এছাড়া রাণীনগর উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মানুষ এই রাস্তার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

রাস্তায় চলাচলকারী এমরান হোসেন, এমদাদুল ইসলাম, মকলেছুর রহমান, জাফর আলীসহ আরো কয়েকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে আমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারী মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

তারা বলেন, দীর্ঘদিনেও এই রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করতে দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মুনির উদ্দিন, শাহিনুর ইসলাম, ইব্রাহীম, সোহেল হোসেনসহ আরো অনেকেই বলেন, এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে বর্তমানে তারা গাড়ি চালিয়ে রোজগারের টাকা দিয়ে সংসার চালাতে পারছেন না।

তারা বলছেন, রাস্তার যে পরিস্থিতি যেখানে ২০ মিনিটের রাস্তা এখন যেতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট। এছাড়াও প্রতিনিয়তই অটোরিকশার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। সেগুলো ঠিক করতেই তাদের রোজগারের টাকা প্রায় শেষ হয়ে যায়।

এভাবে চলতে থাকলে হয়তো এই রাস্তায় গাড়ি চালানো বন্ধ করে অন্য কোনো রাস্তায় গাড়ি চালানো শুরু করতে হবে। তা না হলে তাদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পরবে বলে দাবি করেছেন। তাই দ্রুত এই রাস্তার কাজ শেষ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :