এবারের ঈদ তাদের কাছে বড়ই আনন্দের!

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২১, ১৭:৫৪ | প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০২১, ১৭:৩১

ফরিদপুরের সদরপুরের শত স্বপ্ননীড় থেকে আলফাডাঙ্গার স্বপ্ননগর; জেলার নয়টি উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীনে নির্মিত প্রত্যেকটি ঘর যেন ভূমি ও গৃহহীন মানুষের কাছে এক স্বপ্নের ঠিকানা, পরম নির্ভরতার স্থান। তাই তো এবারের ঈদ বড়ই আনন্দের তাদের কাছে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমিসহ ঘর পেয়েছেন বোয়ালমারীর চতুল ইউনিয়নের সুকদেবনগর গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী বিধবা নারী রাহেলা বেগম।

তিনি বলেন, ‘আমার ইট্টু জমি হবে, একখান ঘর হবে, এই কথা স্বপ্নেও ভাবি ন্যাই। তয় এইবার আল্লা মুখ তুইল্যা তাকাইছে। মাইয়াগো নিয়্যা জীবনে এই প্রথমবারের মতো এট্টা ঈদ করবো নিজের ঘরে! আমি অহন নিজের এট্টা ঠিকানা পাইছি।’

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন হাজার ৬০৭ ভূমিহীন ছিন্নমূল পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। আর ওই ঘরের জমিও তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক ঘরে উপকারভোগীরা উঠে পড়েছেন। তবে এখনো সামান্য কিছু ঘরের কাজ বাকি আছে।

বোয়ালমারীর সুকদেবনগর গ্রামের ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেকটি ঘরের মালিক আব্দুস সামাদ শেখের স্ত্রী সালেহা বেগম বলেন, ‘আমাগের মতো গরিবের জীবনতো পথে পথেই শ্যাষ হইয়্যা যায়। কেউ হয়তো বিপদের সময় চাইল, ডাইল, কাপড় দেয়। কিন্তু জমির সাথে ঘর দিয়ার কথা শুনি ন্যাই। আমাগো শেখ হাসিনা আমাগের জন্য এই ব্যবস্থা কইর‌্যা দিছে। আমরা তার প্রতি চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞ। আল্লাহ উনারে আরো অনেকদিন বাঁচায় রাখুক।’

জেলার সদর উপজেলার কানাইপুরে ইব্রাহিমদি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে সাতটি সারিতে ২৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলোতে এরই মধ্যে অনেকেই মালামাল নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন। গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার বাসিন্দারা কেউ ঘর গোছাচ্ছেন, কেউ রান্নাবান্নায় ব্যস্ত। ঘরের কোণার জমিতে এরই মধ্যে নানাজাতের ফুলের গাছসহ ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করেছেন অনেকে।

কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন ফকির বলেন, ‘আমরা একেবারে হতদরিদ্রদেরই বাছাই করে এসব ঘরের তালিকা পাঠানোর পরে সে অনুযায়ীই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এইসব পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোকে বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেয়া ভিজিডিসহ নানা সাহায্য করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর উপহার দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পাকা ঘর পেয়ে প্রত্যেক উপকারভোগী ও তার পরিবারে নেমে এসেছে আনন্দের বন্যা। তাদের চোখে মুখে আজ পরিতৃপ্তির হাসি।

ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলেন, আগে যেখানে সবসময় আশ্রয়ের চিন্তায় ব্যস্ত থাকতে হতো, আজ সেই সেই মানুষগুলো নিশ্চিত আশ্রয় পেয়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের জীবন ব্যবস্থাটাকে পাল্টে দেওয়ার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। নিজের আঙিনায় চাষ করছেন। এতে অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে আলফাডাঙ্গায় স্বপ্ননগরী নামে নতুন একটি গ্রামের সৃষ্টি করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে মানুষের জীবন জীবিকার জন্য হাটবাজারও তৈরি করা হয়েছে। অসহায় দরিদ্র মানুষগুলোর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়, এ শুধুই অনুভবের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, এই কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা তাদের ঘরে খাবারও পৌঁছে দিচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এসএ/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :