চাকরি বাঁচাতেই ঢাকায় ছুটছে মানুষ

‘সরকার বলে বন্ধ, কিন্তু অফিসে না গেলে চাকরি থাকবে না’

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০২১, ১৬:৪১
অ- অ+

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সরকার ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। এই পরিস্থিতিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা বন্ধ থাকার কথা থাকলেও মালিকদের চাপে চাকরি বাঁচাতে আবারও কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। আজও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে।

সরেজমিন পাটুরিয়া ফেরি ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরছে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিস বন্ধ থাকলেও প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিক-আপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে মানুষ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছুটছে। যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে ঘাট কর্তৃপক্ষকে। যাত্রীদের মাঝে স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা কম। আর সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

ফরিদপুরের আনোয়ার হোসেন। ঢাকার একটি পোশাক কারখানার সুপারভাইজার। লকডাউনের মধ্যে কেন ঢাকায় যাচ্ছেন প্রশ্ন করলে বলেন, ‘অফিস থেকে বলা হয়েছে ১ আগস্ট থেকে অফিস না করলে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হবে। তাই চাকরি বাঁচাতেই ঢাকায় যাচ্ছেন। চাকরি চলে গেলে পরিবারের সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে। এখন আমার ঢাকায় যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।’

সালেহা আক্তার, পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়া থেকে ৫০০ টাকা খরচ করে ভেঙে ভেঙে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসেছি। তারপর ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করে ফেরিতে করে পাটুরিয়ায় আসার পর মোটরসাইকেলে করে ২৫০ টাকা দিয়ে মানিকগঞ্জ এসেছি। এখন তো কোনো কিছুই দেখছি না। তাই হাটা শুরু করেছি। সামনে সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেল পেলে তাতে করে চলে যাবো।’

বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা আক্ষেপ করে বলেন, আর্থিক দিক দিয়ে গরীব, তাই তাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। সরকার বলে সব বন্ধ। আর মালিকেরা বলছে অফিসে না এলে চাকরি থাকবে না। যে টাকা বেতন পাই তাতে ঢাকায় যাওয়া ও আসার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে ফেরিতে যাত্রী পার না করার। কিন্তু প্রয়োজনের সময় যখন আমাদের ফেরি ছাড়তে হয় তখন শত শত মানুষ ফেরিতে উঠে পড়ে। তখন বাধ্য হয়েই তাদেরকে পার করতে হয়।’

বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ছয়টি ফেরি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে।

এদিকে মহাসড়কে কোনো গণপরিবহন না থাকায় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ব্যাটারিচালিত অটোতে চলাচল করতে হচ্ছে ঢাকামুখী মানুষের। গণপরিবহন না থাকায় ছোট ছোট গাড়ির উপর নির্ভরশীল মানুষ। এই সুযোগকে দুর্বলতা হিসেবে নিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/এসএ/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে দুই ককটেল বিস্ফোরণ
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১৬৯০ জন
এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধাদের স্মরণে ‘বিআরপি’র মশাল মিছিল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা