বিএনপির নিজেদের কোনো অর্জন নেই: হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ২০:২১

বিএনপির নিজেদের কোনো অর্জন নেই, দেশের জনগণ তাদের আর রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপিকে মানুষ কেন ভোট দেবে? পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল বললেন, আওয়ামী লীগ থেকে বাঁচার জন্য ভোট দেবে। বিএনপির নিজের কোনো অর্জন নেই। ফখরুল সাহেব নিজেদের কোনো অর্জনের কথা বলতে পারেননি। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো পৈশাচিক কর্মকাণ্ড করেছে, দেশের মানুষ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

শনিবার (৯ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা, কূটনীতিবিদ আতাউর রহমান খান কায়সারের একাদশ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, ‘আতাউর রহমান খান কায়সার ভাইদের মতো ভালো মানুষেরা চলে গেছেন। রাজনীতিতে আজ ভালো মানুষের বড় অভাব।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এদেশের কিছু বিরোধী দল শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। অথচ তারাও সরকারে ছিল, দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি, এখন আবার সমালোচনায় ব্যস্ত। টেলিভিশন খুললেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দেখি, শুধু সরকারের সমালোচনা করছেন।’

মির্জা ফখরুল অসহায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে, সেই সন্ত্রাসীদের কাছে আজ মির্জা ফখরুল সাহেব অসহায়। তার মতো মানুষ পেট্রোল ঢেলে কাউকে পুড়িয়ে মারতে পারেন, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। কিন্তু তাকে এ কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। কারণ তারেক রহমানের নির্দেশ না মানলে তার পদ থাকবে না।’

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশ্যে হানিফ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব- আপনি সত্য কথা বলার অভ্যাস করুন। মিথ্যা আর বলবেন না। স্বীকার করুন, এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সত্য স্বীকারের মধ্যে লজ্জা নেই।’

স্মরণসভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আমরা অনেকেই নেতা হওয়ার পর আর তৃণমূলের দিকে ফিরে তাকাই না। স্বাভাবিক শিষ্টাচার, সৌজন্যটুকু পর্যন্ত দেখাই না। কর্মীদের সালাম নিতে আমাদের কষ্ট হয়।’

স্বপন বলেন, ‘আতাউর রহমান খান কায়সার আমাদের নেতা ছিলেন, কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন, দলের প্রতি অন্তঃপ্রাণ ছিলেন। ওয়ান ইলেভেন যখন আসে, শেখ হাসিনা যাদের নেতা বানিয়েছিলেন, দলের বিভিন্ন পদপদবী দিয়েছিলেন, তাদের অনেক রাজনৈতিক নেতা সেদিন বিশ্বাসঘাতকতা করে সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। তখন একমাত্র কায়সার ভাই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে ‍সুধাসদনের সামনে গিয়ে নেত্রীর পক্ষে সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। নেত্রীর প্রতি বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে তিনি অন্য নেতাদের মতো কুণ্ঠাবোধ করেননি। তিনি সবসময় আমাদের ‍হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কঠিন দুঃসময়ে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে আতাউর রহমান খান কায়সার, এম এ মান্নান, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, আক্তারুজ্জামান বাবু ভাইয়েরা কোনোদিন পিছপা হননি। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সময় যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম আমরা তাদের নেতৃত্বে করেছি। রাজপথে মার খেয়েছি, আমার পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে এম এ মান্নান, আবু সালেহ ভাইয়ের নেতৃত্বে রাজপথে মিছিল করেছি। মন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতানের সন্ত্রাসীরা সেদিন আমাদের ওপর হামলা করেছিল।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘আতাউর রহমান খান কায়সার এবং উনার স্ত্রী না থাকলে আমাদের পড়ালেখা হতো কি না আমি জানি না। কারণ কায়সার আঙ্কেল এমন নেতা ছিলেন, মাঠের নেতা মহিউদ্দিনের ঘরে আগুন জ্বলছে কি না সেই খবর তিনি সবসময় রাখতেন। উনার নিজের দুই মেয়ে যে স্কুলে পড়েছেন, আমি এবং আমার বোন টুম্পাকেও সেই বাওয়া স্কুলে তিনি ভর্তি করেছিলেন। শিশু বয়স থেকে আমি উনার সান্নিধ্য পেয়েছি। আমার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী খুবই রাগী প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কিন্তু কায়সার আঙ্কেলের সামনে যখন বসতেন তখন উনার কথা খুব মনযোগ দিয়ে সম্মানের সঙ্গে শুনতেন।’

কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দলের কঠিন সময়ে অনেক নেতা বিশ্বাসঘাতকতা করলেও আতাউর রহমান খান কায়সারের মতো সাহসী লোক কখনো ঘাতকতা করেননি। তিনি আমৃত্যু নেত্রীর প্রতি বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিয়ে গেছেন। তিনি সবসময় আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।’

অনুষ্ঠানে আতাউর রহমান খান কায়সারের জ্যেষ্ঠ কন্যা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বাবার রূহের মাগফেরাত কামনায় সবার দোয়া কামনা করেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান এবং সাংসদ নজরুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান প্রমূখ।

(ঢাকাটাইমস/০৯অক্টোবর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :