নিউমোনিয়া কেন হয়, লক্ষণ কী, করণীয়ই বা কী

দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীতকাল। ঠান্ডার এই মৌসুমে শিশুদের নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তার মধ্যে অন্যতম নিউমোনিয়া। এই রোগের জীবাণু মানুষের ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রকে আক্রান্ত করে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস এবং টিবির জীবাণুর মাধ্যমে নিউমোনিয়া ছড়ায়। আক্রান্ত হয় বয়স্করাও।
গত প্রায় তিন বছর ধরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নিউমোনিয়া আরও বেশি আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কেন হয় নিউমোনিয়া? কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি বা আপনার শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত? নিউমোনিয়া হলে করণীয়ই বা কী?
বাংলাদেশে প্রতিদিন ৬৭জন শিশু মারা যায় শুধুমাত্র নিউমোনিয়ার কারণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বজুড়ে সংক্রমণের কারণ শিশু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ নিউমোনিয়া। কী কী ধরনের নিউমোনিয়া হতে পারে। নিউমোনিয়া হচ্ছে শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ, যা ফুসফুসকে আক্রান্ত করে।
ফুসফুসের এক ধরনের ইনফেকশনের নাম নিউমোনিয়া। এটি সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহের জন্য হয়ে থাকে, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় রেসপাইরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশন। এই প্রদাহ যখন জীবাণুঘটিত বা সংক্রমণজনিত হয়ে রোগ তৈরি হয়, তখন এটিকে নিউমোনিয়া বলে।
যেসব লক্ষণে বুঝবেন নিউমোনিয়া হয়েছে
জ্বর ও ক্লান্তি অনুভব করা, মাত্রাতিরিক্ত ঘাম ও কাশি হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট, বুকব্যথা ও শরীরে কাঁপুনি, মাথাব্যথা ও শরীরের মাংসপেশি ব্যথা, খাওয়ার প্রতি অনীহা ও বমি বমি ভাব।
নিউমোনিয়া থেকে বাঁচাতে করণীয়
নিউমোনিয়ার কিছু ভ্যাকসিন বের হয়েছে। ভ্যাকসিনগুলো যদি সময়মতো নেওয়া যায়, তাহলে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যায়। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
শিশুকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে। এছাড়া হাঁচি-কাশি আক্রান্ত লোকের সামনে থেকে শিশুদের দূরে রাখুন। সবসময় ধুলাবালি থেকে দূরে রাখুন। শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা। এছাড়া খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
বয়স ছয় মাসের কম এমন শিশু যদি বুকের দুধ পান করে, তবে সে নিউমোনিয়ার জীবাণু অনেকটাই প্রতিহত করতে পারবে। যে শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি, তাদের যদি বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার হিসেবে দেশীয় খাবার খাওয়াতে পারেন, তবে খুব ভালো।
এ সময় শিশুর গোসলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। শীতে শিশুদের ডায়াপার ঘন ঘন পরিবর্তন করা উচিত। এই রোগের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে কী ধরনের নিউমোনিয়া রোগীকে আক্রমণ করছে তার ওপর। তাই ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/২নভেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন