তামাকবিরোধী আইন শক্তিশালী করার তাগাদা
বাংলাদেশে তামাকে প্রতিদিন ৪৪২ জনের মৃত্যু

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মারা যায়। তামাক নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এই মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদ, চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদসহ বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এই দাবি জানান। বক্তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি ততই বাড়বে।
গোলটেবিল বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৫ সালে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি গৃহীত হয়। এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারগুলোর জন্য ডব্লিওএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রথম দেশ হিসাবে এই কনভেনশনে সাক্ষর করেছে। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতা এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বড় বাধা হিসাবে কাজ করছে। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারী পরিবারগুলোর মাসিক খরচের ৫ শতাংশ তামাক ব্যবহারে এবং ১০ শতাংশ তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ব্যয় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তামাকের কারণে দরিদ্র মানুষ, আরও দরিদ্র হয়ে পড়ে, যা এসডিজির দারিদ্র্য নির্মূল সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় বাধা।
অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী বলেন, নারী শিশুসহ অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে আইন শক্তিশালীকরণের কোন বিকল্প নেই ।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ক্যানসার, হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক । তাই এসডিজির লক্ষ্য পূরণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা উচিত বলে মত দেন চিকিৎসক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার।
গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন-এর সদস্য ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, এনটিভির হেড অব নিউজ জহিরুল আলম, আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, কোকনভেনর নাদিরা কিরণ ও প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন