শিগগিরই চালু হচ্ছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:১৩
ফাইল ফটো

কয়লা সংকটে বন্ধ হওয়া রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ফের চালু হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩৩ হাজার মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে জাহাজ বাংলাদেশের পথে রয়েছে। শিগগিরই দেশে পৌঁছাবে এই কয়লা। ফলে চলতি সপ্তাহেই বন্ধ থাকা ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদ একরাম উল্লাহ বলেন, ‘এ সপ্তাহেই কয়লার জাহাজ মোংলায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করতে এক সপ্তাহের মতো সময় লেগে যাবে। এখান থেকে খালাসের পর কয়লা সরাসরি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে চলে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা সংগ্রহ বিঘ্নিত হওয়াতে, হঠাৎই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট বন্ধ করতে হয়। সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত কয়লা আসবে। ফলে আর কয়লার সংকট থাকছে না।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়া কয়লা ছাড় করতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি এস পাইনেল’ ৩৩ হাজার মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছানোর পর ছোট লাইটার জাহাজে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে।

চলমান ডলার সংকটের কারণে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর ২৭ দিনের মাথায় গত ১৪ জানুয়ারি বন্ধ হয়ে যায় প্রথম ইউনিট। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার প্রথম ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। যা এখনও বন্ধ রয়েছে।

দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সুন্দরবনসংলগ্ন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপরে কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বিনিয়োগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দুই দেশ সমঝোতা স্মারকে সই করে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে দুই দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানি বিপিডিবি ও এনটিপিসি যৌথ একটি কোম্পানি গঠন করে।

ইকুইটি বিনিয়োগ সমান ভাগে ধরে ‘মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট রামপাল’ বাস্তবায়নে গঠন করা হয় ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৭ সালে। বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বিআইএফপিসিএলের তথ্য অনুযায়ী, কাজ শুরুর তারিখ থেকে ৪১ মাসের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার কথা থাকলে করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়। একবছর পিছিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উৎপাদন শুরুর চিন্তা করা হয়। কিন্তু সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হওয়া, পাশাপাশি কয়লার সংস্থান না হওয়ায় তা আবার পেছানো হয়।

বারবার তারিখ পেছানোর পর গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে উৎপাদনে যায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। যদিও পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছিলো আরও আগে। কিন্তু কয়লা সংকটের কারণে গত ১৪ জানুয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়।

গত শনিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। সেখানে পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কয়লা সংকট একটি অপারেশনাল ইস্যু। সংকট থাকবে না। আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে রামপালের দু’টি ইউনিটই পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে।

(ঢাকাটাইমস/০৮ফেব্রুয়ারি/আরকেএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :