ভাঙনের মুখে ১২ দলীয় জোট!

জাহিদ বিপ্লব, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৫ জুন ২০২৩, ২১:১৬ | প্রকাশিত : ১৫ জুন ২০২৩, ২১:০০

গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় জনসমাবেশের আগে হঠাৎ করে ২০ দলীয় জোটের বিলুপ্তি ঘোষণা করে বিএনপি। এতে অনেকটা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে শরিক দলগুলো। এরপর নিজেদের নিজস্বতা ধরে রাখতে এই ২০ দলীয় জোট দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ২০ দলীয় জোটের বাইরে আরো দুই-তিনটি দলকে সম্পৃক্ত করে গঠন করা হয় ১২ দলীয় জোট এবং ১১দলীয় জোট। এরই মধ্যে ভাঙনের মুখে পড়েছে ১২ দলীয় জোটটি।

১২ দলীয় জোটের তিন মাস না পেরুতেই জোট থেকে বের বের হয়ে যায় লেবার পার্টি। আর সাত মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার জোট থেকে বহিস্কার করা হলো এনডিপিকে। আর এসব বিষয়ে জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া নেতারা বলছেন, ১২ দলীয় জোটে কোনো সমন্বয় নেই। কে চেয়ারম্যান তাই জানি না। চেয়ারম্যানের ভূমিকায় একবার জামাল হায়দার, একবার সৈয়দ ইববারিম, একবার এহসানুল হুদা আরেকবার শাহাদাৎ হোসেন সেলিমকে দেখা যায়। এখানে কোনো সমন্বয় নেই।

এ বিষয়ে জোট থেকে বহিস্কার হওয়া ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মোহাম্মদ আবু তাহের ঢাকা টাইমসকে বলেন, ১২ দলীয় জোট থেকে আমাকে বহিস্কার করার ক্ষমতা সৈয়দ এহসানুল হুদা বা জোটের কেউ রাখে না। কারণ ১২ দলীয় জোট বলতে কিছু নেই। এ জোট গঠন করেছি আমি। লেবার পার্টির ইরানকেও একই কায়দায় জোট থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করেছে। এ জোটকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে জোটের একজন নেতা। সে ইনসাফের সঙ্গেও জড়িত ছিল। উপর দিয়ে তারেক রহমানের গুণগান গাইলেও ভিতরে ভিতরে তাকে ধ্বংস করছে। বিএনপির প্রকৃত বন্ধুকে দূরে রাখার অপচেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগের স্কাই সিটি হোটেলে ১৯টি রাজনৈতিক দল নিয়ে ‘গোপন’ বৈঠক করার অভিযোগ আসে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপির সভাপতি ক্বারি মো. আবু তাহেরের বিরুদ্ধে। সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা অংশ হিসেবে এ বৈঠক বলে মনে করছেন জোটসহ বিএনপি নেতারা।

এদিকে ১২দলীয় জোট নেতারা বলছেন, ক্বারী আবু তাহের সম্পর্কে অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে আগেই এসেছে। তার সাম্প্রতিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জোটসহ বিএনপি নেতারা অবগত হয়েছেন।

এ বিষয়ে ১২ দলীয় জোটের প্রধান সাবেকমন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার ঢাকা টাইমসকে বলেন, যুগপৎ বৃহত্তর আন্দোলনের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য রাখার জন্য কাজ করে যাবো। সেক্ষেত্রে কোনো অপচেষ্টা এটাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

এ বিষয়ে জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এ জোটের প্রধান কে তাইতো আমি জানি না। একেক সময় একেকজন নেতা৷ এখানে নির্দিষ্ট কারো নিয়ন্ত্রণ নেই। এখানে স্বেচ্ছাচারিতা ও একনায়কতন্ত্র চলছে। যে উদ্দেশ্যে এটি গঠিত হয়েছে সে সফলতা তারা পাবে কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান।

ইরান বলেন, ১২ দলীয় কয়েকজন চক্রান্তকারী আছেন। তাদের মতের সঙ্গে মিল না হলেও একটি বানোয়াট অভিযোগ তুলে তাকে জোট থেকে বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে। মঙ্গলবার সে বৈঠক হয়েছে সেখানে কোনো ষড়যন্ত্র হয়নি। এটি ওপেন মিটিং। তাছাড়া সাংবাদিকও ছিল। ষড়যন্ত্র কখনও ওপেন হয় না।

১১ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এ বিষয়ে ঢাকা টাইমসকে বলেন, আন্দোলন নসাৎ করার জন্য সরকার কিছু টোপ ফেলবে। যারা গিলবে তারা বেঈমান হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও সরকার এ ধরনের টোপ ফেলেছিল। আর যারা এ টোপে পা দিয়েছেন তারা হারিয়ে গেছেন।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান এ বিষয়ে বলেন, যারা জোটের ভিতরে থেকে ষড়যন্ত্র করবে তাদের থেকে সাবধান থাকা আমাদের সকলেরই উচিত। আন্দোলন যখন একটা পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায়, তখন এ আন্দোলন বানচাল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র হয়। কিন্তু তা সফলতায় রূপ নেয় না।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/জেবি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :