কলাপাড়ায় বন উজার করে মাটি বিক্রির হিড়িক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বন উজার করে মাটি বিক্রি করছে একদল চিহ্নিত ভূমি দস্যুরা। উপজেলার গঙ্গামতি ও চর গঙ্গামতি এলাকার সবুজ বনায়ন ধ্বংস করে তারা এ কাজগুলো করছে। স্থানীয় চিহ্নিত ভূমি দস্যু আবু সালেহ একটি বাহিনী গঠন করে বন উজার করার এ খেলায় মেতে উঠেছে। প্রশাসনের নাগের ডগায় বসে একাজগুলো করলেও অজানা কারনে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। তবে, স্থানীয়দের দাবি, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের এ কাজে সহায়তা করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গঙ্গামতির ৩৩ কানি সংলগ্ন রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় সরকারি বন বিভাগের জায়গা রয়েছে। যেখানে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সবুজ বনায়ন ছিল। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এ গাছগুলো অন্যতম ভূমিকা পালন করত। সেখানে বেকু দিয়ে দিনরাত মাটি খনন করে তা চায়না প্রজেক্টের একাধিক কোম্পানির কাছে বিক্রি করছে ভূমিদস্যুরা। বেড়িবাঁধের কাজ চলমান থাকায় প্রশাসনের চোখের সামনেই তারা নির্বিঘ্নে একাজগুলো করছে। বেড়িবাঁধের উন্নয়নমূলক কাজের মাটির জন্য সরকার প্রতিটি কোম্পানিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য নির্ধারন করে দিয়েছে। অথচ এ চিহ্নিত ভ‚মি দস্যুরা তুলনামূলক কম মূল্যে সরকারি বন কেটে মাটি বিক্রি করায় কোম্পানিগুলোও সেই মাটি নির্দ্বিধায় ক্রয় করছে। এতে উৎসাহীত হয়ে দিন দিন ভ‚মি দস্যুদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শুধু তাই নয় স্থানীয় সাধারন মানুষগুলোকে এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছে ওই ভূমিদস্যুরা। যারা একসময় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো তাদের দাপটে সাধারণ মানুষদের এখন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে থাকতে হচ্ছে। স্থানীয় চিহ্নিত ভূমি দস্যু আবু সালেহ ফকির তার আপন ভাই আবু তালেব ফকির, খালেক ফকির ও চাচাতো ভাই দোয়েল ফকির একত্র হয়ে বীর দর্পে সরকারি বন উজার করে মাটি বিক্রি করার খেলায় মেতেছে। বন উজার করে মাটি বিক্রি করার হিড়িক পড়লেও দেখেও না দেখার ভান করছে স্থানীয় বন বিভাগের কমকর্তা মো. আবুল কালামসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদের নজরে আনলেও মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চালানোর পরে পুনরায় শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। শুধু তাইনয়, এসকল ভূমিদস্যু ও মাটি ক্রয়কারী কোম্পানীর লোকদের সঙ্গে হোটেলে নৈশ্য ভোজ করে বেড়াচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওই কর্মকর্তারা। রক্ষক যখন ভক্ষক হয় তখন কে রক্ষা করবে সরকারি বন- এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত আবু সালেহর কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বিকার করে সংযোগটি বিছিন্ন করে দেন।
মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম এ বিষয়ে বলেন, আগে অনেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করেছে। তাদের নামে একাধিক মামলা দেয়া হয়েছে। আবারও কেহ অবৈধভাবে মাটি কাটার চেষ্টা করলে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে বন বিভাগের মাটি কাটার কোন সুযোগ নেই। কেহ অবৈধভাবে মাটি কেটে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এআর)

মন্তব্য করুন