কুড়িগ্রামে ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় শতাধিক চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়ে পড়েছে জেলার নদ-নদীর অববাহিকায় নিম্নাঞ্চগুলো। তিস্তা নদীর অববাহিকায় রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে দুই হাজারের বেশি মানুষ, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে এক হাজার মানুষ এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে জেলার ৩৩৫ হেক্টর রোপা আমন ধান ও ৫০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গো-চারণ ভূমিগুলো পানির নিচে রয়েছে।
মঙ্গলবার ও বুধবার কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)র দেয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ৯ সেন্টি মিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টি মিটার, চিলমারী পয়েন্টে ১৩ সেন্টি মিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টি মিটার, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২২ সেন্টি মিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টি মিটার, পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৩৯ সেন্টি মিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টি মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৮৭ সেন্টি মিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি শহিদুল ইসলাম বলেন, 'তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চর নাকেন্দা, গতিয়াশাম, খিতাবখাঁ, চর খিতাব খাঁ এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের দুই হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে এসব চরাঞ্চলের বাসিন্দারা গবাদি পশুর খাদ্য সংকটে পড়তে পারে।'
উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, 'কয়েকদিন থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা তীরবর্তী জুয়ান সতরা, চর নিয়াশা, চর গোড়াইপিয়ার প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী কুমারপাড়া এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ৬০টি পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।'
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, 'তিস্তা নদীর পানি গতকাল যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিলো। আজ সকাল থেকে পানি কমলেও তা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার ভেতর সবগুলো নদ-নদীর পানি অনেকটা কমে আসবে।'
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, 'কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ১৮টি স্থায়ী ও ৩৬১টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য জেলার নয় উপজেলায় ৭৬ মে. টন চাল, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াও জেলায় ৩৮৭ মে.টন চাল, ১০ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা ও ৩ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য বাবদ ২ লাখ ও গো খাদ্য ক্রয় বাবদ পাঁচ লাখ টাকা নগদ মজুত রয়েছে।'
(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/এসএ)

মন্তব্য করুন