বিএনপিকে ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা ১৪ দল নেতাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ২১:২২

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমাবেশ থেকে বিএনপিকে আর ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। নেতারা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কোনো আপস হবে না। তারা বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল। শিষ্টাচার বহিঃর্ভূত আচরণ করছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি রাষ্ট্রদূত হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হোক। তার বদলে নতুন রাষ্ট্রদূত দেওয়া হক। আমেরিকা বলছে ভিসানীতি প্রয়োগ করবে। ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় কার বিরুদ্ধে ভিসানীতি সেটি স্পষ্ট করেনি। বাংলাদেশকে অকার্যকর করতে, পাকিস্তান বানাতে যারা সংবিধানের ওপর আঘাত করেছে তাদেরকে আর ছাড় নয়। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করলে বিএনপিকে রাজপথেই সমুচিত জবাব দেয়া হবে।

সোমবার বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা। বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক পুলিশ হত্যা, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ১৪ দল।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।

সভাপতির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি সন্ত্রাস নৈরাজ্য করেছিল। এখন আবার শুরু করেছে। ইসরায়েল যেমন গাজার ওপর হামলা করছে বিএনপি সেরকমই শুরু করেছে।

আমু বলেন, বিচার বিভাগকে অপদস্ত করার জন্য প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে বিএনপি। দেশকে অকার্যকর করতে, পাকিস্তান বানাতে যারা সংবিধানের ওপর আঘাত করেছে তাদের আর ছাড় নয়। অবরোধের নামে যাতে কোনো নৈরাজ্য করতে না পারে এজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তাদের প্রতিহত করতে রাস্তায় থাকতে হবে। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করলে বিএনপিকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। এখন থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে ১৪ দল। সংবিধান অনুযায়ী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। দেশের জনগণের জানমাল রক্ষায় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নিদের্শনা দেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিএনপি-জামায়াত আবার নতুন করে তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে। কর্মসূচির নামে যদি বাসে আগুন দেয়, পুলিশ, আনসার হত্যা করে তাহলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দেওয়া হলে বাংলাদেশ থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করা হবে। তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তান তাদের প্রভু। তারা প্রভুর কথার বাইরে যায় না। আমাদের কোনো প্রভু নাই, আমাদের বন্ধু আছে। আমাদের শক্তি হলো দেশের জনগণ।

কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নির্বাচন চায় না, অনির্বাচিত সরকার চায়। তারা সংবিধান মানে না। যারা দেশের জনগণকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে, দেশের আইনশূঙ্খলাবাহিনীকে হত্যা করে, তাদের সঙ্গে কোনো আপস নয়। ২৮ অক্টোবর বিএনপি দেশের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হতে পারে না। যারা দেশের মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, এদেরকে নির্মূল করা না হলে দেশে শান্তি আসবে না। এদেরকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। আবারো শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আনতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে হবে।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, গত ২৮ অক্টোবর আমরা আবার বিএনপি জামায়াতের সহিংসতা দেখলাম। এদেশের মানুষ ভেবেছিল সন্ত্রাসী এ দলটি যেভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছন্ন হয়েছিল তারা আর সন্ত্রাসী কার্যক্রম করবেন না। কিন্তু জনগণের ধারণা ভুল প্রমাণ করে তারা আবারও সহিংস করছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কাজ ছাড়া কিছু নেই। দেশের আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়, তারা বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল। তারা নিজেরা ক্ষমতায় থাকতে এ দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। এখনও চেষ্টা করছে।

বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, এখনও সময় আছে এই আগুন খেলা বাদ দিয়ে আপনারা নির্বাচনে আসুন। সংবিধান অনুযায়ী এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখুন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আগুন সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে ছাড়বে না দেশের মানুষ। দেশের মানুষ ক্ষেপে ওঠলে বিএনপি লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যাবে। বিএনপি দেশের মানুষের ওপর নির্ভর না করে, বিদেশের ওপর নির্ভর করছে। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চায়। আমেরিকা বলছে ভিসানীতি প্রয়োগ করবে। ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় কার বিরুদ্ধে ভিসানীতি প্রয়োগ হবে, সেটি স্পষ্ট করেনি।

হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি হলো গণতান্ত্রিক মুখোশধারী সন্ত্রাসীদল। গণতান্ত্রের মুখোশধারী রাজনীতির শয়তান। তাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে রাজাকার, জঙ্গি, বিএনপি-জামায়াতের ঐক্যের নামে কোনো আপস হবে না। নির্বাচনকে জঙ্গি, সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে অপরাধীদের কারাগারে আটকে রাখতে হবে। পিটার হাস আর রাষ্ট্রদূত হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণের জন্য সরকার থেকে পিটার হাসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হোক। নতুন রাষ্ট্রদূত পাঠাক আমেরিকা।

(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/জেএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দেশের জনগণ আজ ভয়াবহ পরিস্থিতি অতিক্রম করছে: রিজভী

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-আ.লীগে অস্বস্তি, মাঠপর্যায়ে কেন উপেক্ষিত দলীয় সিদ্ধান্ত

প্রয়াত নেতা পিন্টুর কবর জিয়ারতে বিএনপি নেতারা

ট্রেনভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চেয়ে কমলাপুরে সিপিবির বিক্ষোভ

জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন: ফারুক

দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে মীরজাফর হিসেবে চিনবে: রিজভী

শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুর কাছে গণমাধ্যম বারবার আত্মসমর্পন করেছে: বাংলাদেশ ন্যাপ

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার

কে এই মামুনুল হক? যেভাবে পান ব্যাপক পরিচিতি

হেফাজতের সাবেক নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :